অথৈ পানির মাঝে শত বছর ধরে অক্ষত কবর!
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে তিস্তা সেচ ক্যানেলের চারদিকে অথৈ পানি। তার মাঝখানে একটি কবর। চারপাশে পানির মাঝেও কবরটি অক্ষত। ভাসমান এই কবরকে ঘিরে রয়েছে নানা রহস্য।
অলৈাকিক কবরটি বর্ষার ভরা মৌসমেও অদৃশ্য হয়নি কখনো। শত বছর ধরে পানির উচ্চতা অনুযায়ী ওঠানামা করা কবরটি ঘিরে স্থানীয়সহ গোটা জেলায় কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এই কবরে শায়িত আছেন দেবার উদ্দিন হাজি নামের এক ব্যক্তি। তিনি ঊনবিংশ শতাব্দিতে পাঁয়ে হেঁটে হজ করেছেন। কাজ করেছেন ইসলাম প্রচারেও। হজে যাওয়ার আগে দরিদ্র ও ভূমিহীন এলাকাবাসীর কল্যাণে ৮২ একর জমি দান করেছেন তিনি। হজ শেষে দেশে ফিরে মারা যান। পরে কিশোরগঞ্জের ছিট রাজিব পশ্চিম সরকারপাড়া এলাকার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছিল তাকে।
কথিত আছে, একবার কবর থেকে স্থানীয় দুই ব্যক্তি ইট চুরি করার চেষ্টা করেন। পরে অভিযুক্ত দুজনই রহস্যজনকভাবে মারা যান।
এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম মিয়া, রবিউল হক ও নজরুল ইসলাম জানান, সেচ ক্যানেল খননের সময় বাকিসব কবর সরানো হলেও অক্ষত থেকে যায় দেবার হাজির কবরটি। এমনকী ভেকু দিয়ে সরাতে গেলেও ভেকু ঠিক সেখানে গিয়ে বিকল হয়ে যায়। পরে ব্যর্থ হয়ে শ্রমিকরা কবরটি অক্ষত রেখে ফিরে যান। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, পানি বাড়লে কবরটি ভেসে ওঠে আর পানি কমলে ধীরে ধীরে নিচে নেমে যায়।

রহস্যময় দেবার হাজির কবর নিয়ে মানুষের বিস্ময়ের শেষ নেই। কেউ এটিকে অলৌকিক কুদরত হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ কেউ রহস্যের কারণ খোঁজার চেষ্টা করছেন।
কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বাবু জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেবার হাজি ছিলেন একজন প্রভাবশালী, ধনী ও ধর্মপ্রাণ মানুষ। পায়ে হেঁটে তিনি হজ পালন করেন। দেশে ফিরে মারা গেলে তাকে এই স্থানেই দাফন করা হয়। কবরটি আল্লাহর কুদরতে এখনো অক্ষত রয়েছে।’
আমিরুল হক/এসআর/জিকেএস