ভৈরবে দুই বংশের সংঘর্ষে ৩০ জন আহতের দাবি
কিশোরগঞ্জের ভৈরবের লুন্দিয়া গ্রামে দুই বংশের আধিপত্য বিস্তারের সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে দুই পক্ষ। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের কাছে ১১ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। একজনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া গ্রামের শেখ বাড়ি ও মোল্লা বাড়ির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকেলে আধিপত্যকে কেন্দ্র করে উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের লুন্দিয়া গ্রামের মোল্লা বাড়ি ও শেখ বাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মোল্লা বাড়ির নেতৃত্ব দেন ইউপি সদস্য হারুন মিয়া ও মুর্শিদ মিয়া। অপরদিকে শেখ বাড়ির নেতৃত্ব দেন মাইন উদ্দিন মিয়া ও দিলু মিয়া।
এর আগে ৪ ডিসেম্বর আগানগর ইউনিয়নের টুকচাঁনপুর মেঘনা বাজারে একটি বন্ধ হোটেলের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের সহযোগিতার দেওয়ার বিষয় ও তাদের দেখতে যাওয়ার সময় লুন্দিয়া গ্রামের শেখ বাড়ি ও মোল্লা বাড়ির লোকদের তর্কাতর্কির জেরে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই ঘটনায় সোমবার সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার দিকে উভয় পক্ষ দা, বল্লম, লাঠি ও ইট পাটকেলসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় উভয়পক্ষের ৩০ জনের বেশি আহত হয়েছে।
মোল্লা বাড়ির সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের ইউনিয়নের টুকচানপুর গ্রামে গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণে গুরুতর আহতদের দেখতে গিয়েছিলাম আমরা। সেখানে যেতে মোটরসাইকেলে যেতে হয়। মোটরসাইকেল চালকরা ছিল আওয়ামী লীগ সমর্থক। এ বিষয়ে আমাদের মোল্লা বাড়ির বিএনপির নেতাদের সঙ্গে শেখ বাড়ির বিএনপির নেতাদের বাগবিতণ্ডার জেরে প্রথমে দুইজনের মধ্যে মারামারি হয়। পরে দুই বংশের সংঘর্ষে রূপ নেয়। এসময় আমিসহ সংঘর্ষে আমাদের মোল্লা বাড়ির ১৫ জনের মতো আহত হয়েছে।
শেখ বাড়ির গোলাপ মিয়া বলেন, মোল্লা বাড়ির বিএনপির নেতারা আওয়ামী লীগের নেতার সঙ্গে আঁতাত করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার শুরু করেছে। আমরা তাদের এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে গেলে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে বিষয়টি সংঘর্ষে রূপ নেয়।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক উম্মে হাবীবা জুঁই বলেন, লুন্দিয়া গ্রামের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় বিকেল পাঁচটা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১১ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদের মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান আকন্দ জানান, লুন্দিয়া গ্রামের দুই বংশের সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশের দুইটি টিম পাঠানো হয়। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজীবুল হাসান/এফএ/জেআইএম