যে কথায় জামায়াত কষ্ট পায়, সে কথা বলবো না: মেজর আখতারুজ্জামান

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৮:২৪ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫

বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন বলেছেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি— যে কথায় জামায়াতে ইসলামী কষ্ট পায়, সেই কথা বলবো না। প্রয়োজনে আমার জবান কেটে দেব। কারণ তারা আমাকে আশ্রয় দিয়েছে। আমি তাদের ভালো-মন্দের সঙ্গে থাকবো। জামায়াত তাদের রাজনীতি করবে, এগিয়ে যাবে।’

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার গচিহাটা কলেজ মাঠে আয়োজিত এক কৈফিয়ত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী আমাকে আশ্রয় দিয়েছে। তারা যদি আমাকে আশ্রয় না দিত, তাহলে হয়তো আমাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে হতো। এ বয়সে নতুন করে ঘর বা দল গড়ার সামর্থ্য আমার নেই। আমার ঘরে চাল নেই, চুলা নেই— আমি কীভাবে নতুন ঘর বানাবো। এ বয়সে কেউ আমাকে আশ্রয় দেবে না। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী আমাকে আশ্রয় দিয়েছে। এজন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এ কৃতজ্ঞতা আজীবন থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘হঠাৎ দেখছি আমার দাম বেড়ে গেছে। বিএনপির অনেক বন্ধু ফেসবুকে আমাকে নিয়ে লেখালেখি করছে। এতে আমি শুকরিয়া জানাই। তারা এখন বুঝতে পারছে, আমি তাদের ঘরের একটি মোটা খুঁটি ছিলাম। আমি নিজে দল ছেড়ে আসিনি, আপনারা আমাকে বের করে দিয়েছেন। গত তিন বছর আমার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখেননি, এমনকি বিয়ের দাওয়াতও দেননি। আজ আমাকে গালাগালি করছেন— এতেও ভালো লাগে, কারণ বুঝি আপনারা আমাকে নিয়ে ভাবছেন।’

সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে মুসলমান, হিন্দু, খ্রি ও বৌদ্ধ সবাই মিলেমিশে বসবাস করবে। আমি কোনো নির্বাচনে অংশ নেবো না। জামায়াত যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে নিশ্চয় তারা আমাকে কোনো ভালো জায়গায় রাখবে।’

জামায়াতের কাছে তিনটি আবদার তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রথমত, আমি চাই দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজিমুক্ত, সন্ত্রাস ও দখলদারমুক্ত বাংলাদেশ। আমরা আর চাঁদা দিতে চাই না, রাস্তাঘাটে নিরাপদে চলতে চাই। দ্বিতীয়ত, সত্য প্রকাশ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা চাই, বিশৃঙ্খলা নয়। শান্তির মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হোক। তৃতীয়ত, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মর্যাদা চাই—মানুষ মানুষকে সম্মান করবে।’

এ সময় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যার বিচার দাবি করে তিনি বলেন, আমরা একজন ত্যাগী হাদিকে হারিয়েছি। আমরা এ হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। যারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত, প্রয়োজনে পাতাল থেকে তুলে এনে হলেও তাদের বিচার করতে হবে। আমরা শুধু বিচারই চাই না, শরিফ ওসমান হাদির রেখে যাওয়া কাজ বাস্তবায়ন করতে চাই।’

সভায় কিশোরগঞ্জ-২ আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মাওলানা শফিকুল ইসলাম মোড়ল, উপজেলা আমির অধ্যাপক মোজাম্মেল হক জোয়ারদার, সেক্রেটারি মাওলানা মাহমুদুল হাসানসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ১৩ ডিসেম্বর জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের হাতে ফুল দিয়ে বিএনপির সাবেক এমপি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতে যোগদান করেন।

এসকে রাসেল/আরএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।