জাহাঙ্গীরের মরদেহের অপেক্ষায় তারাকান্দি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:১৬ পিএম, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

সুদানের আবেই এলাকায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সেনা সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের (৩০) মরদেহ নিজ গ্রাম কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার তারাকান্দিতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে আজ। পরে তাকে সামরিক মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুপম দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে জাহাঙ্গীর আলমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে হেলিকপ্টারে করে তার মরদেহ পাঠানো হবে পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ নেওয়া হবে জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামে। গ্রামে দ্বিতীয় জানাজা শেষে যথাযথ সামরিক মর্যাদায় তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

জাহাঙ্গীরের মরদেহের অপেক্ষায় তারাকান্দি

জাহাঙ্গীরের মরদেহ ফেরার খবরে তারাকান্দি গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। বাড়িতে অপেক্ষায় রয়েছে তার তিন বছরের একমাত্র ছেলে ইরফান, স্ত্রী রুবাইয়া আক্তার, বৃদ্ধ মা পালিমা বেগম ও বাবা হযরত আলী। বাবার আদর কী, তা বোঝার আগেই চিরতরে পিতৃহারা হলো ইরফান। এতে পুরো গ্রামজুড়ে বইছে শোকের আবহ।

শহীদের বাড়িতে একে একে ছুটে আসছেন স্বজন, প্রতিবেশী ও গ্রামবাসী। কেউ জানতে চাইছেন মরদেহ কখন পৌঁছাবে, কেউ টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রেখে খোঁজ নিচ্ছেন সর্বশেষ খবর। সহপাঠী, বন্ধু ও পরিচিতজনেরা অপেক্ষায় আছেন জানাজায় অংশ নিতে, শেষবারের মতো প্রিয় জাহাঙ্গীর আলমকে দেখতে।

জাহাঙ্গীর আলম কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের আকন্দ বাড়ির হযরত আলীর ছেলে। তিনি সেনাবাহিনীতে মেস ওয়েটার পদে কর্মরত ছিলেন। প্রায় ১১ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি সেনাবাহিনীতে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

জাহাঙ্গীরের মরদেহের অপেক্ষায় তারাকান্দি

আইএসপিআর জানায়, গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী শহীদ হন। এর আগে গত ৭ নভেম্বর তিনি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনের জন্য সুদানে যান।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শহীদ শান্তিরক্ষীদের মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম মরদেহ গ্রহণ করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিন ভাইয়ের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম ছিলেন মেজো। তার বড় ভাই মো. মোস্তফা প্রবাসে কর্মরত এবং ছোট ভাই মো. শাহিন মিয়া কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। শান্তির দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই বিদেশের মাটিতে শহীদদের কাতারে যুক্ত হলেন জাহাঙ্গীর আলম।

এস কে রাসেল/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।