সৈয়দপুরে জমজমাট গরম কাপড়ের বেচাকেনা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ০৮:৫৫ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
সৈয়দপুরে জমে উঠেছে গরম কাপড়ের বেচাকেনা

‘দেখি ন্যাও, বাছি ন্যাও। দাম মাত্র ২০ টাকা’—সৈয়দপুরের রেললাইনের পাশে এভাবেই ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন উত্তরের ‘গুলিস্তান’ খ্যাত নীলফামারীর মৌসুমি গরম কাপড়ের ব্যবসায়ীরা। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে বেচাকেনা। তবে ফুটপাতগুলোতে এসব কাপড়ের দাম তুলনামূলক কম।

নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের গরম কাপড়ের চাহিদা মেটাতে প্রতি বছরের মতো এবারও এখানে প্রায় পাঁচ শতাধিক দোকান বসেছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা এখানে ভিড় জমাচ্ছেন। বিক্রেতাদের তথ্যমতে, এই বাজারে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকার পুরোনো কাপড় বিক্রি হচ্ছে। এবারের মৌসুমে শতকোটি টাকার বেচাকেনার আশা ব্যবসায়ীদের।

বুধবার (২৪ ডিসেস্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গরম কাপড়ের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বেচাকেনা চলছে। সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে এসব কাপড়। শিশুদের গেঞ্জি ও সোয়েটার ২০ থেকে ৫০ টাকা, বড়দের সোয়েটার ও জ্যাকেট ৮০ থেকে ৩০০ টাকা এবং মেয়েদের বিভিন্ন শীতের পোশাক ৭০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।

উন্নতমানের জ্যাকেট ও সোয়েটার ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এখানে সকাল ৯টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে বেচাবিক্রি। ঘন কুয়াশ ও উত্তরের হিমেল বাতাসের কারণে বেড়েছে শীত। শীত নিবারণের কোনো উপায় না পেয়ে অনেকে আসছেন ফুটপাতগুলোতে কম দামে শীতের গরম পোশাক কিনতে।

সৈয়দপুরে জমজমাট গরম কাপড়ের বেচাকেনা

আজিম উদ্দিন, নাবিল ইসলাম ও রোমানা আক্তার নামের কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, জেলার সবচেয়ে বড় গরম কাপড়ের দোকান সৈয়দপুরে। এ কারণে জেলার বিভিন্ন উপজেলা শহর ও পাশের জেলাগুলো থেকে অনেকে গরম কাপড় কিনতে এসেছেন। কারণ এখানে অল্প দামে ভালো গরম কাপড় কিনতে পাওয়া যায়। তবে গত বছরের তুলনায় দাম বেশি হলেও বাজারের তুলনায় অনেক কম।

গরম কাপড়ের মৌসুমি বিক্রেতা মাসুদ পারভেজ জাগো নিউজকে বলেন, গত বছর যে ‘বেবি বেল’ (গাট্টি) পাঁচ হাজার টাকায় কেনা যেত, এবার তা ৭-৮ হাজারে কিনতে হচ্ছে। জ্যাকেট বেল ১০ হাজার থেকে বেড়ে ১৫ হাজার এবং কম্বল ১০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত দরে মহাজনদের কাছ থেকে কিনতে হচ্ছে। মূলত তাইওয়ান, জাপান ও কোরিয়া থেকে আমদানি করা এসব কাপড়ের বেলের দাম এ বছর চট্টগ্রাম আড়তেই আড়াই থেকে চার হাজার টাকায় কেনা লাগছে। ফলে খুচরা বিক্রিতেও এর প্রভাব পড়ছে।

পাইকারি ব্যবসায়ী আল আমিন বলেন, ‘পরিবহন খরচ ও আমদানি করা কাপড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার ব্যবসার পুঁজিতে টান পড়ছে। চট্টগ্রাম থেকে একেকটি বেল আনতে গত বছরের চেয়ে এবার গড়ে ৩-৪ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। এ কারণে খুচরা যারা কেনেন তাদেরও একটু বেশি দরে কিনতে হচ্ছে।’

আমিরুল হক/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।