জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উদ্বোধনের পরই জাটকা নিধন
জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে শনিবার । দুর্যোগ,ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম) এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী মোঃ ছায়েদুল হক। কিন্তু জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোনের পরই পদ্ম-মেঘনায় জাটকা নিধনের মহোৎসবে মেতেছে অসাধু জেলেরা।
জেলেদের কোন পক্ষ থেকেই বাঁধা দেয়া হচ্ছে না । অর্থাৎ প্রশাসনের দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থা, রাজনৈতিক মদদে অসাধু জেলেদের অবাধে জাটকা নিধন হচ্ছে। যার জন্য এবারো ভেস্তে যাচ্ছে জাটকা সংরক্ষণ অভিযান।
চাঁদপুরের পুরানবাজার, যমুনা ঘাট, আনন্দ বাজার, মোহনপুর, এখলাছপুর, ষাটনল, হরিণা ফেরীঘাট, আলুর বাজার, হাইমচর, চরভৈরবীসহ মেঘনা তীরের বেশ কয়েকটি ঘাটে বিপুল পরিমাণে জাটকা ধরা এবং বেচা-বিক্রির ধুম পড়েছে। বিশেষ করে পুরাতন ফায়ার সার্ভিস তালগাছ তলা নিচে, রনাগোয়াল খালের মুখে, বায়ু বিদ্যুৎ টাওয়ারের ঝিনুক পাড়, দোকান ঘর গুচ্ছ গ্রামের পিছনে, রামদাসদি স্লুইস গেইট খালের মুখে, মৌলভি বাড়ির পিছনে নদীর পাড়ে, আনন্দ বাজার নদী তীরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় জাটকা বেঁচা কেনা যেন প্রতিদিনের হাট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এসব ঘাটগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ১৫ থেকে ২০ মণ করে জাটকা বেচা-কেনা হচ্ছে। এসব জাটকা বিক্রেতাদের আটক করতে প্রশাসনের অনিহা কেন- এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক গুঞ্জন রয়েছে। নদী তীরে প্রতি কেজি জাটকা জেলেদের কাছ থেকে পাইকাররা কিনে নিচ্ছেন মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ ঘাটগুলোতে প্রতিদিন সকালে এবং সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রকাশ্যে জাটকা বেচা-বিক্রি হচ্ছে। আড়ৎদারদের কাছ থেকে পাইকারি জাটকা ক্রয় করে অটোরিক্সা অথবা সিএনজি যোগে বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যায়। প্রতিদিন প্রকাশ্যে বিপুল পরিমাণে জাটকা বেচা-বিক্রি হওয়ায় অনেকে আবার এমনও বলছে, রিভার পুলিশ ভাগ হওয়ার পর তারা যেন জাটকা নিধন প্রতিরোধে নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে।
একটি সূত্র থেকে জানা যায়, এসব ঘাটের আড়ৎদাররা ফাঁড়ি পুলিশকে ম্যানেজ করেই তাদের জাটকা নিধনের এ অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় শত শত হকার এসব অবৈধ জাটকা মাছ বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় বিক্রি করছেন।
সরকারের মৎস্য সম্পদ রক্ষার অভিযানকে তোয়াক্কা না করে অসাধু মহল প্রশাসনের সাথে আঁতাত করে প্রতি বছর তাদের ব্যবসা চালিয়ে আসছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়।
এছাড়া জেলেদের চাল বিতরণেও রয়েছে বিভিন্ন ইউনিয়নে ব্যাপক অনিয়ম। অভিযোগ পাওয়া যায়, জেলে না হয়েও অনেকেই পাচ্ছেন জাটকার চাল।
এমজেড/আরআই