মানুষ গরু একসাথে বসতি সেখানে
মাত্র তিন শতক জমি নিয়ে বিরোধ আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায়ের পরিবারের সঙ্গে জামাল গাজীর। আর এই বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রশাসন নিয়ে ভাংচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে ইউএনও বিরুদ্ধে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে গোটা মুন্ডা সম্প্রদায়ের মানুষ।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা সদরের বাধঘাটা গ্রামের সম্প্রতি ঘটেছে এমন ঘটনা। ভুক্তভোগীরা নিরাপত্তাহীনতায় অন্যত্র চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। নতুন ইউএনও যোগদানের পরেই এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন মুন্ডা সম্প্রদায়ের মানুষ।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা সদরের মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে বাধঘাটা গ্রাম। সেখানেই সরকারি খাস জমিতে ডিসিআর নিয়ে বসতি ৩৫ ঘর মানুষের। এর মধ্যে আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায় রয়েছে ৪টি পরিবার।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসের কার্যালয়ে একটি সরকারি প্রকল্পের আইসিটি প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন রাশেদুল ইসলাম। দশ শতক জমি কিনেছেন তিনি। এরই মধ্যে মুন্ডা সম্প্রদায়ের চারুমুন্ডার জমির মধ্যে তার জমি ঢুকেছে তিন শতক। এজন্য ভেঙে যাওয়া গোয়ালঘরটি তিনি করতে দিচ্ছেন না। গোয়ালঘরটি করতে না দেওয়ায় গরু নিয়ে রাখছেন বসত ঘরে।
শ্যামনগর সদরের বাধঘাটা গ্রামের চারু মুন্ডা জাগো নিউজকে জানান, ইউএনও সাহেব জামাল গাজীর ছেলে রাশেদুল গাজীর পক্ষ নিয়ে দশ শতক জমি দখল করে দিচ্ছে আমার জমির উপরে। এর আগে যারা ইউএনও ছিল তারা কোনো সমস্যা করিনি। নতুন ইউএনও এসেই ঝামেলা শুরু করেছে। বলে গেছে ঘেরা ভেঙে জায়গা দিতে হবে রাস্তার জন্য।
-20170713125730.jpg)
চারুমুন্ডার ছেলে রাম প্রসাদ মুন্ডা জানান, আমরা এখানে ২৪/২৫ বছর ধরে বসবাস করছি ডিসিআর কেটে। বসবাস করার পর থেকে এখানে খুব ভালো ছিলাম। ঘর ছিলো ঘরটা ঝড়ে পড়ে যাওয়ার পরে গোয়াল ঘরটা আর বাধতে দিচ্ছে না।
জমি জায়গা নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে বলে আমাদের এখান থেকে উচ্ছেদ করে দেবে জানিয়ে স্থানীয় বিলকিস বানু বলেন, আমরা এখানে ৩৫/৩৬ ঘর লোক বাস করি। আমাদের উপর এত অত্যাচার হচ্ছে আমরা এখানে টিকতে পারছি না।
তবে অভিযুক্ত জামাল গাজী বলেন, আমরা গায়ের জোরে জমি দখল করছি না। ৭শতক জমি কিনে দখল করছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসের একটি সরকারি প্রকল্পের আইসিটি প্রশিক্ষক রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমি রেকর্ডীয় জমি কিনেছি। যাদের কাছ থেকে জমিটা কিনেছি বার বার বলার পরও তারা জমিটা বুঝিয়ে দিচ্ছে না। মুন্ডা পরিবারের সাথে আমার কোনো বিরোধ নেই।
তবে এসব বিষয়ে ইউএনও মো. কামরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, আমি বিষয়টি সমাধানের জন্য গিয়েছিলাম। কাউকে কোনরূপ হুমকি দেওয়া হয়নি। যেহেতু এখন সম্পূর্ণরুপে মাপজরিপ করা হয়নি সেজন্য সাময়িকভাবে স্থাপনা নির্মাণে নিষেধ করা হয়েছে।
শ্যামনগরের সহকারী কমিশনার ভূমি শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ বলেন, আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। আমাদের কাছে যে ম্যাপটি রয়েছে সেটা পুরতন ম্যাপ সে ম্যাপে মাপজরিপে দেখা গেছে মুন্ডারা যে জায়গটি দখল করে আছে সে জায়গাটির মধ্যে রেকর্ডীয় জমি তিন ফিট রয়েছে।
আকরামুল ইসলাম্/এফএ/পিআর