মেহেরপুরে তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন
মাঘ মাস আসতে আরও কয়েকদিন বাকি। অথচ মেহেরপুরে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। শুরু হয়েছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। গত কয়েক দিনে তাপমাত্রা কমেছে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড শীতে সবচাইতে বেশি বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষ। কাজ না পেয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। তবে শীতের প্রকোপ বাড়ায় হাসপাতালে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।
মেহেরপুরে গত কয়েক দিনে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ শনিবার তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুন। আজ চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর অঞ্চলের তাপমাত্রা ৫. ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রতিদিনই দুপুরের পর সূর্যের দেখা মিলছে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। শ্রমজিবী মানুষ কাজের সন্ধানে এসে কাজ না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। অনেকেই খড়কুটো জ্বালীয়ে শীত নিবারণ করার চেষ্টা করছে।
এদিকে তাপমাত্রা কমায় হাসপাতালে বৃদ্ধি পাচ্ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। সর্দি-কাশি, ঠান্ডা, ব্রঙ্কাইটস ও ডাইরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। বড়রা আক্রান্ত হচ্ছে শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে। বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা। শয্যা না পেয়ে অনেকের ঠাঁই হয়েছে বারান্দায়।
মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের দিনমুজুর নয়ন হোসেন জানান, গত কয়েকদিনের শীতে তাদের আয়েও ভাটা পড়েছে। কনকনে শীতে কাজের সন্ধানে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে নিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
মেহেরপুর গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সোহাগ জানান, কয়েকদিন আগে তার এক বছর বয়সী শিশু ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। শয্যা না পাওয়ায় বারান্দায় রেখে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। প্রচণ্ড ঠান্ডায় অন্যরোগে আক্রান্ত হবার আশংকা রয়েছে। একই অবস্থা মা ও শিশু ওয়ার্ডে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ইমারজেন্সি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আবু মোহাম্মদ রাজু জানান, শীতজনিত রোগ থেকে বাঁচতে শিশুদের গরম স্থানে রাখতে হবে, পাশপাশি গরম কাপড়ে জড়িয়ে রাখা প্রয়োজন। খাওয়ার আগে ও পরে ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। এছাড়াও সমস্যা দেখা দিলেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর অঞ্চলের তাপমাত্রা ৫. ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত কয়েকদিন থেকে এ অঞ্চলে মাঝারি শৈত্য প্রবাহ শুরু হয়েছে। আগামীতে তীব্র শৈত্য প্রবাহও দেখা দিতে পারে। এ অবস্থা আরো কয়েকদিন চলতে পারে বলে জানিয়েছে আবাহাওয়া অফিস।
আসিফ ইকবাল/এফএ/এমএস