জলাবদ্ধতা নিরসন মেগা প্রকল্প : সিডিএ-সেনাবাহিনী চুক্তি আজ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৯:৫০ এএম, ০৯ এপ্রিল ২০১৮

নানান জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের কাজ।

প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার এ মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে আজ (৯ এপ্রিল) সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।

দুপুরে রেডিসন ব্লু’র মেজবান হলে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে এই সমঝোতা ম্মারক স্বাক্ষর হবার কথা জানিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।

এ লক্ষে দীর্ঘ বিরোধের ইতি টেনে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে দাওয়াত দিতে রোববার (৮ এপ্রিল) নগর ভবনে যান সিডিএ চেয়ারম্যান আব্দুচ ছালাম।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামকে ঘিরে সরকারের যেসব উন্নয়নকাজ চলছে, তার প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে। চট্টগ্রামকে নিয়ে উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো যেভাবে সাজানো হয়েছে, যেসব উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছে এবং যেগুলো চলমান আছে, অনুষ্ঠানে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।

রোববার বিকেলে সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সঙ্গে এমওইউ স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর বৃহৎ এই প্রকল্পের দ্বার উন্মোচন হবে। এ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে নগরবাসী জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা লাগবে’।

সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মাঈনুদ্দিন বলেন, ‘সোমবার সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের পরই প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করবে সেনাবাহিনী’।

এ সময় তিনি জানান, প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ করবে সিডিএ এবং প্রকল্পের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করবে সেনাবাহিনী।

সিডিএ সূত্রে জানা যায়, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সবার আগে আগ্রাবাদ-হালিশহর, বাকলিয়া-চান্দগাঁও ও মুরাদপুর-বহদ্দারহাট এলাকার প্রতি নজর দেয়া হচ্ছে। প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খাল খনন ছাড়াও ৪৮টি গার্ডার ব্রিজ, ৬টি কালভার্ট, খালগুলোতে ৪২ সিল্ট ট্র্যাপ (বালি জমার স্থান), ৫ খালের মুখে টাইডাল রেগুলেটর, খালের উভয় পাশে থাকবে ১৫ ফুট চওড়া রোড এবং আর এস শিট অনুযায়ী খালের উভয় পাশের জায়গা উচ্ছেদের কথা থাকলেও প্রাথমিকভাবে আসন্ন বর্ষা মৌসুমের জন্য ১৬ খাল নিয়েই এগুচ্ছে সংস্থাটি।

এদিকে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সিডিএ’র মেগা প্রকল্পে ওভারলেপিং হওয়ার আশঙ্কায় নগরীর খাল খনন কিংবা অবৈধ দখল উচ্ছেদে কাজ করবে না তারা।

সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল মজিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের কাছে যে যন্ত্রপাতি আছে তা দিয়ে প্রথমে কাজ শুরু করব, প্রয়োজনে আমরা আরও যন্ত্রপাতি ভাড়া নেব অথবা কিনব। তবে সবার আগে আমাদের মাঠে নামতে হবে’।

‘মাঠে নামার পর যেভাবে কাজ করলে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ কমিয়ে আনা যায় এবং পানি রাস্তা থেকে নালায়, নালা থেকে খালে এবং খাল থেকে নদী বা সাগরে নিয়ে যাওয়া যায় সেভাবেই আমরা কাজ করব’ বলেন এ সেনা কর্মকর্তা।

উল্লেখ্য চট্টগ্রামের এই মেঘা প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদে পাস করা হয় গত বছরের আগষ্ট মাসে। এরপর থেকে শুরু হয় চট্টগ্রাম নগরীর ৩টি সেবা সংস্থার রশি টানাটানি। এরই মধ্যে সিডিএ ও সিটি কর্পোরেশন নেমে পড়ে বাকযু্দ্ধে।

এমএমজেড/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।