কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হচ্ছে রাজশাহীতে

ফেরদৌস সিদ্দিকী ফেরদৌস সিদ্দিকী , নিজস্ব প্রতিবেদক রাজশাহী
প্রকাশিত: ১১:৪০ এএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। মায়ের ভাষা রক্ষায় সেদিন রাজপথে প্রাণদান করেন সালাম, রফিক, জব্বার, বরকতসহ আরও অনেকে। এই আন্দোলনে রাজশাহীর সর্বস্তরের পেশাজীবী ছাত্র-জনতার গৌরবময় ভূমিকা ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে।

ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ হয়েছিল রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাস এলাকায়। কিন্তু এই শহীদ মিনারের মেলেনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। প্রথম শহীদ মিনার পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হলেও প্রায় তিন বছর ধরে ঝুলে রয়েছে।

শহরের প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজারের ভূবনমোহন পার্কে রয়েছে আরেক শহীদ মিনার। ঐতিহাসিক এই শহীদ মিনার এখানকার বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের সাক্ষ্য দেয়। কিন্তু দখলে দখলে এটি এখন কার্যত হয়ে পড়েছে অবরুদ্ধ। দীর্ঘদিনেও শিক্ষানগরীখ্যাত এই নগরে নেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনে এই দুই শহীদ মিনারে সমাবেত হন নগরবাসী।

তবে সেই প্রতিক্ষার অবসান হচ্ছে এবার। নগরীর সোনাদীঘি মোড় এলাকায় নির্মাণাধীন সিটি কমপ্লেক্সের সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। এটি নির্মাণ হচ্ছে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলেই।

জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভে ইনস্টিটিউটের এক দশমিক শূন্য এক একর জায়গায় এটি নির্মাণ হবে। নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করবে রাজশাহী সিটি করপোরেশন।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ কোটি টাকা। পুরো অর্থায়ন হবে সরকারি খাত থেকে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সিটি করপোরেশন। শহীদ মিনার নির্মাণের নকশাসহ সব পরিকল্পনা চূড়ান্ত।

শহীদ মিনার নির্মাণ হচ্ছে সোনাদীঘির উত্তর-পশ্চিম পাড় ঘেঁষে। দক্ষিণ দিকে থাকছে সিটি সেন্টার। দীঘির পাড় থেকে সোপান উঠছে শহিদ মিনারের চত্বর পর্যন্ত। থাকছে সুপরিসর ফাঁকা জায়গাসহ পায়ে হাঁটা পথ।

কিন্তু ১৬তলা সিটি সেন্টারের এখন পর্যন্ত নির্মাণ হয়েছে ১৪তলা পর্যন্ত। এই প্রকল্পে রয়েছে মসজিদ, তথ্যপ্রযুক্তি পাঠাগার, এম্ফি থিয়েটার, পায়ে হাঁটা পথ নির্মাণ ও ল্যান্ডস্কেপিংসহ সোনাদীঘির সংস্কার। কাজ শুরুর প্রায় এক দশকে এই কাজে হাত লাগায়নি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনা প্রোপার্টিজ।

২০০৯ সালে পিপিপির আওতায় সিটি করপোরেশনের পুরনো ভবনের জায়গায় সিটি সেন্টার নির্মাণকাজ শুরু করে এনা প্রোপার্টিজ। কথা ছিল, ২০১৪ সালের ১ এপ্রিলে শেষ হবে নির্মাণ। পরে দফায় দফায় সময় বাড়ানো হলেও নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি রাজশাহী-৪ (রাগমারা) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এনামুল হকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ বিষয়ে রাসিকের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক বলেন, নির্মাণাধীন সিটি কমপ্লেক্সের সঙ্গেই যুক্ত হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। জেলা পরিষদের জায়গায় এটি নির্মাণ পরিকল্পনা এখন চূড়ান্ত।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এফএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।