নীলফামারীতে তাপমাত্রা ৭.২ ডিগ্রি, শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ১১:২৩ এএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯

নীলফামারীতে দিন দিন কমছে তাপমাত্রা। সঙ্গে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। শৈত্যপ্রবাহে আর ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। তিস্তা নদীর পারে সন্ধ্যায় হালকা কুয়াশা থাকলেও রাতে কনকনে ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে সকাল ৯টা পর্যন্ত যানবাহনগুলো হেটলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।

ডিমলা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মাহামুদুল ইসলাম বলেন, রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে ডিমলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীতে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ায় কষ্টে দিন কাটছে চরাঞ্চলের মানুষের। শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। তিস্তা নদীর বিভিন্ন চর এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, আগুনের কুণ্ডলি জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করার চেষ্টা করছে অসহায় পরিবারগুলো। শীতের গরম কাপড়ের অভাবে বিপাকে পড়েছে অসহায় জনগোষ্ঠী। বেশি বিপাকে পড়েছে সহায়সম্বলহীন হতদরিদ্র পরিবারগুলো। তারা পুরোনো গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় করছে। তীব্র শীতে বয়স্ক ও শিশুরা নিউমোনিয়া, হাঁপানি, ক্লোড ডাইরিয়া ও কাশিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

তিস্তা পাড়ের পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়শিঙ্গেশ্বর এলাকার ময়েন উদ্দিন জানান, সন্ধ্যা ৬টার পরে তিস্তা এলাকায় কনকনে শীত পড়ছে।

টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের কিছামতের চরের বাসিন্দা আব্দুল করিম জানান, শীতের তীব্রতায় আগুনের কুণ্ডলি জ্বালাতে হচ্ছে।

nilfamari01

জেলা সদরের টুপামারী ইউনিয়নের বেলাল হোসেন ও দোগাছী গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন (৫০) বলেন, শীতের কারণে বেলা ১২টার আগে কৃষি জমিতে কাজে যাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এ কারণে স্বাভাবিক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।

অপরদিকে একই গ্রামের কৃষি শ্রমিক আব্দুল মালেক (২৬) বলেন, শীতের কারণে কাজ কমে গেছে। আর যেটুকু মিলছে তাতে মজুরি কম। পাশাপাশি শীতবস্ত্রের অভাবে পরিবারের দুই শিশু সন্তানসহ দুর্ভোগে আছি।

শীতের কারণে আগের তুলনায় লোক সমাগম কমেছে জেলা শহরে। ফলে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে ব্যবসা বাণিজ্যে। জেলা শহরের ব্যবসায়ী আবুল কালাম (৪৫) বলেন, লোক সমাগম কমার কারণে দোকানে বিক্রি কমেছে।

ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে সরকারিভাবে ৫০০ কম্বল দেয়া হয়েছে। তার ইউনিয়নের পাঁচ হাজার মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে আছে। সেখানে সরকারিভাবে শীতবস্ত্রের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। তিনি সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

ডিমলায় এ পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৬০০ কম্বল বিতরণের কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. নাজমুন নাহার।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এসএ হায়াত জানান, নীলফামারীতে এ পর্যন্ত তিন দফায় ৪২ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও ২০ হাজার কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

জাহেদুল ইসলাম/আরএআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।