শ্বাসকষ্ট দেখে এগিয়ে আসেনি কেউ, সারাদিন বাসস্ট্যান্ডে শ্রমিক
‘করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন’ সন্দেহে তিনজন বগুড়ার সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশন কেন্দ্রে ভর্তি। হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করছেন। তারা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গতকাল রোববার বিকেলে দুজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তির বাড়ি বগুড়ার ধুনট উপজেলায়। অপরজন ২৬ বছরের এক যুবক। কুমিল্লা থেকে তার বাবার কর্মস্থল বগুড়ার কাহালুতে এসে ওই যুবক অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার শ্বাসকষ্ট রয়েছে।
এদিকে করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ঢাকা থেকে রংপুরে পরিবারের কাছে ফেরেন ৫৫ বছর বয়সী শ্রমজীবী এক ব্যক্তি। শনিবার রাতে পণ্যবাহী ট্রাকে রওনা দেন তিনি। পথে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট ও কাশি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে রোববার তাকে ট্রাক থেকে ফেলে যাওয়া হয় বগুড়ার শিবগঞ্জের মহাস্থান বাসস্ট্যান্ডে। সেখানে সারাদিন অসুস্থ ওই ব্যক্তিকে অসহায় অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেও কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে রাতে পুলিশের সহায়তায় প্রথমে ভর্তি করা হয় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাকে সোমবার সকালে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।
বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিক আমিন কাজল বলেন, প্রথম দুজনের মধ্যে একজন ধুনটের বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় থাকতেন। বাড়ি ফিরে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে রোববার বিকেলে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আসেন। তাকে ভর্তির পর প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। তার ফুসফুসের অবস্থা ভালো। একই দিন ভর্তি হওয়া অপর যুবকের অবস্থা তুলনামূলক খারাপ। তবে লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু হয়েছে। করোনা ইউনিট হিসেবে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল তাদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেবেন।
সোমবার ভর্তি হওয়া ব্যক্তির বাড়ি রংপুর জানিয়ে ডা. শফিক আমিন বলেন, করোনা উপসর্গ নিশ্চিত হতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি তাকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালকে করোনা ইউনিট হিসেবে প্রস্তুত করার পর চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। সরঞ্জাম পাওয়া গেলে আরও ভালোভাবে চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
এএম/এমএস