ওসিকে দেখে কাঁদলেন মিনারা, বললেন একবেলা খেয়ে বেঁচে আছি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ভোলা
প্রকাশিত: ০৯:২৭ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২০

করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা মেনে গত কয়েকদিন তিন বেলার পরিবর্তে এক বেলা খেয়ে জীবন ধারণ করেছিল দুটি পরিবার। খবর পেয়ে তাদের এক মাসের বাজার করে দিলেন ওসি।

ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চর আনন্দ গ্রামের এক সন্তানের জননী স্বামীহারা মিনারা বেগম (৩৫)। অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি।

পাশাপাশি অসুস্থ হয়ে গত কয়েকদিন গৃহবন্দি দিনমজুর মহিউদ্দিন ব্যাপারী। দিনমজুরের কাজ করে পাঁচ সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালান তিনি। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা মেনে ঘরে রয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু ঘরে খাবার নেই। তাই এক বেলা খেয়ে বেঁচে আছেন তারা।

খবর পেয়ে নিজের বেতনের টাকা তুলে এক মাসের বাজার নিয়ে দুই অসহায় পরিবারের বাড়িতে হাজির হলেন ভোলার ইলিশা নৌ-থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজন কুমার পাল।

হঠাৎ করে বাড়িতে পুলিশ নিয়ে ওসির আগমন দেখে অবাক হয়েছেন দুই অসহায় পরিবারের সদস্যরা। খুশিতে চোখে পানি চলে আসে তাদের।

ওসিকে দেখে স্বামীহারা মিনারা বেগম বলেন, ঘরে খাবার নেই। এক বেলা কোনোমতে খেয়ে বেঁচে আছি। আপনার দেয়া খাবার না পেলে আগামীকাল থেকে আমাদের না খেয়ে থাকতে হত।

jagonews24

অসুস্থ দিনমজুর মহিউদ্দিন বলেন, এমন দুঃখের দিনে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আপনি (ওসি)। আমরা আল্লাহর কাছে আপনার জন্য দোয়া করি। আপনাকে আল্লাহ ভালো রাখুক।

দুই পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ২৫ কেজি করে চাল, পাঁচ কেজি করে আলু, এক কেজি করে ডাল, এক লিটার তেল, এক কেজি পেঁয়াজ, ৫০০ গ্রাম হলুদের গুঁড়া, ৫০০ গ্রাম মরিচের গুঁড়া, এক কেজি আটা, এক কেজি চিনি, দুটি সাবান, এক কেজি লবণ ও কাঁচাবাজার তাদেরকে দিয়েছেন ওসি। এতে তাদের এক মাস চলে যাবে। এখন আর তাদের এক বেলা কিংবা না খেয়ে থাকতে হবে না।

ইলিশা নৌ-থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজন কুমার পাল বলেন, স্থানীয় একজনের কাছে জানতে পারলাম ওই দুই পরিবার রোববার থেকে এক বেলা লবণ দিয়ে ভাত খেয়ে বেঁচে আছে। আগামীকাল বুধবার তাদের ঘরের চাল শেষ হলে না খেয়ে থাকবে তারা। এ কথা শুনে বেতনের টাকা তুলে তাদেরকে এক মাসের বাজার করে দিলাম। বাজার পেয়ে তাদের চোখে পানি দেখে মনে হয়েছে পুলিশের চাকরিজীবন সার্থক হয়েছে আমার।

তিনি আরও বলেন, সমাজের বিত্তবান মানুষ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ালে করোনা দুর্যোগ কেটে যাবে। তাই বিত্তবানদের কাছে আমার অনুরোধ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান।

জুয়েল সাহা বিকাশ/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।