ফেসবুক লাইভে গানের টাকা দিয়ে ৩৫টি পরিবারকে সহায়তা
করোনা দুর্যোগ মোকাবেলায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিলেন রাঙ্গামাটির সন্তান মনি পাহাড়ি ও নাট্যশিল্পি আশিক সুমন। করোনা পরিস্থতিতে ফেসবুক লাইভ চ্যারিটি শো করে আলোচনায় এসেছেন তারা।
যে কোনো দুর্যোগে সাধারণ মানুষকে সহায়তা করার জন্য শিল্পীরা বিভিন্ন চ্যারিটি শো'র আয়োজন করেন। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে সেটা সম্ভব নয়। এ কারণে গতি থিয়েটার'র সভাপতি মনি পাহাড়ি প্রথম ফেসবুক লাইভ চ্যারিটি শো'র কথা ভাবেন। তাকে সমর্থন দেন শিল্পী আশিক সুমন।
গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় ফেসবুক লাইভ চ্যারিটি শো করলেন তারা। তাদের এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিভিন্নমহল।
মনি পাহাড়ি বলেন, কিছুদিন থেকে লক্ষ্য করছি একটি মানবিক ফেসবুক কমিউনিটি গড়ে উঠেছে। ভালো কাজে এগিয়ে আসা মানুষের সংখ্যা অনেক। দুর্যোগে সহযোগিতা দিতে বহু চ্যারিটি শো হয় পৃথিবীজুড়ে। কিন্তু এখন সময়টা ঘরে থাকার। ঘরবন্দি এ সময়ে চ্যারিটি করতে তাই ফেসবুক লাইভ'র আশ্রয় নিলাম।
মনি পাহাড়ি আরও বলেন, ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত এবং শুধুমাত্র ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচিতদের সাড়াটা প্রত্যাশার অধিক। মানুষের ইতিবাচক সাড়া পেয়ে মাঝে মাঝেই ফেসবুক লাইভ চ্যারিটি শো নিয়ে আসার কথা জানালেন গতি থিয়েটার এর এ দুই কর্ণধার। লাইভে গান গেয়েছেন আশিক সুমন এবং সঞ্চালনার পাশাপাশি স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেছিলেন মনি পাহাড়ি।
এ চ্যারিটি শো'র মাধ্যমে অনুদানকৃত অর্থ দিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে তারা ৩৫টি পরিবারকে কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মাধ্যমে সহায়তা দিয়েছেন। এর মধ্যে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলায় ২০টি ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় ১৫টি পরিবার এ সাহায্য পেয়েছে।
বাঘাইছড়িতে এ কার্যক্রমে সহায়তা করছে থিযেটারকর্মী সুশান্ত চাকমা এবং মনিষা চাকমা। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় করোনা ফেসবুক লাইভ চ্যারিটি শো নিয়ে আবারও আসছেন তারা এমনই জানালেন এ দুইজন।
ফেসবুক লাইভ চ্যারিটি শো করার পর দেশের বিভিন্নস্থান থেকে বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আর্থিক অনুদান দিয়েছেন।
আশিক সুমন বলেন, বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ নিজ নিজ জায়গা থেকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে যাচ্ছেন। তারপরও পাহাড়ের মানুষের টানে যারা হাত বাড়িয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। অনেকে কাছাকাছি বিকাশ না থাকায় ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সহায়তা করতে পারছেন না। কেউ কেউ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না বলে নিজ বিকাশে যতটুকু ছিল সবটুকু দিয়েছেন। যারা অনুদান দিয়েছেন তাদের মধ্যে কয়েকজন পরবর্তীতে আরও সহায়তা দিতে উৎসাহ প্রকাশ করেছেন। আমরা নিয়মিতভাবে সংকট চলাকালীন এই শো করে যাব এবং যতটুকু পাব তিন থেকে চারদিন পরপর সেটুকু দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াব।
ভিন্নধর্মী ভাবনা এবং সময়োপযোগী পদক্ষেপের জন্য মানুষের মনে অল্প সময়ের মধ্যেই যে আলোড়ন তৈরি হয়েছে সেটি অব্যাহত থাক এমনটাই প্রত্যাশা সুধী সমাজের।
সাইফুল/এমএএস/পিআর