সচেতনতা বাড়াতে মাঠে নেমেছে শিশু রুদ্রজিৎ
সারাবিশ্বে এখন এক আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা ভাইরাস থেকে বাঁচতে সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
মানুষকে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করতে মাঠে নেমেছে রুদ্রজিৎ পাল নামে সাত বছর বয়ী এক শিশু। করোনার দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে রীতিমতো একজন করোনাযোদ্ধা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে শিশু রুদ্রজিৎ।
রুদ্রজিৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা সদরের রাধানগর এলাকার বিশ্বজিৎ পাল বাবু ও রুমা রানী পাল দম্পতির সন্তান। সে স্থানীয় মেধা বিকাশ প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্র।
শনিবার (২ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আখাউড়া উপজেলার বিভিন্ন সড়কে ঘুরে ঘুরে করোনাভাইরাস সম্পর্কে মাইকিং করে মানুষের মাঝে সচেতনতামূলক বার্তা ছড়িয়েছে শিশু রুদ্রজিৎ। নিজ হাতে লেখা সচেতনামূলক লিফলেট ও মাস্ক বিতরণ করে সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানিয়েছে সে।
তিন ঘণ্টা মাইকিং করে রুদ্রজিৎ বলেছে, ‘শুনুন শুনুন শুনুন। একটি ঘোষণা শুনুন। আপনারা স্বাস্থ্য সচেতন থাকবেন। অকারণে ঘর থেকে বের হবেন না। ঘর থেকে বের হলে মুখে পরুন মাস্ক, হাতে পরুন গ্লাভস। দূরত্ব বজায় রাখবেন। নিয়মিত হাত ধুবেন। ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন।
মাইকিংয়ের পাশাপাশি আখাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আখাউড়া পৌরসভার মেয়রের কার্যালয়ে গিয়েও তাদের সচেতনামূলক লিফলেট দিয়ে করোনার এ সময়ে স্বাস্থ্য সচেতন থেকে মানুষের পাশে থাকার অনুরোধ জানায় শিশু রুদ্রজিৎ।
মাইকিং করার সময় রুদ্রজিতের সঙ্গে তার কাকা প্রসেনজিৎ পাল সান্টু ও সুরজিত পাল অর্ণব এবং স্থানীয় ধারাভাষ্যকার খোরশেদ আলম বাবু ছিলেন।
শিশু রুদ্রজিৎ পাল জানায়, টিভিতে দেখি মানুষ কথা শোনে না। আমি ছোট বলে আমার কথা শুনবে মনে করে রাস্তায় বের হয়েছি মানুষকে সচেতন করতে। সেজন্য আমি নিজের হাতে লিখে লিফলেট তৈরি করেছি। আমার লেখা পড়েও মানুষ সচেতন হতে পারে।
রুদ্রজিতের বাবা সংবাদকর্মী বিশ্বজিৎ পাল বাবু জানান, টেলিভিশন চ্যানেলে দেখে রুদ্রজিৎ স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়গুলো নিজের আয়ত্বে এনেছে। এসব মুখস্থ করে নিজ হাতে লিখে লিফলেট বানিয়েছে। লিফলেটের পাশাপাশি মাস্ক বিতরণের কথা জানালে সেটিও দেয়া হয় তাকে।
শিশু রুদ্রজিতের এ উদ্যোগের প্রশংসা করে আখাউড়ার ইউএনও তাহমিনা আক্তার রেইনা জাগো নিউজকে বলেন, করোনায় মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনায় শিশু রুদ্রজিতের মাইকিং, নিজের হাতে লেখা লিফলেট এবং মাস্ক বিতরণ আখাউড়াবাসীর জন্য একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে। আশা করি অন্তত রুদ্রজিতের ডাকে সাড়া দিয়ে হলেও করোনার এ সময়ে নিজেদের সুরক্ষার জন্য সবাই সচেতন হয়ে ঘরে থাকবেন।
আজিজুল সঞ্চয়/এমএএস/জেআইএম