চাঁদপুর সদর উপজেলায় নমুনা সংগ্রহ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ
নমুনা সংগ্রহে নিয়োজিত দুই স্বাস্থ্যকর্মীর একজনের করোনা শনাক্ত ও আরেকজন করোনার উপসর্গ নিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকায় চাঁদপুর সদর উপজেলায় নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এর ফলে সদর উপজেলায় বাসা-বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা বন্ধ হয়ে গেছে।
এছাড়া মঙ্গলবার চাঁদপুরে আরও ৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে চাঁদপুর সদরের ৫ জন, ফরিদগঞ্জের ২ জন ও হাজীগঞ্জের ২ জন রয়েছেন।
চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজেদা বেগম পলিন বলেন, চাঁদপুরে আরও ৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে চাঁদপুরের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এবং সদর উপজেলা ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের আরও ২ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ২১৯ জন।
জেলায় মোট আক্রান্তের মধ্যে চাঁদপুর সদরে ১১৬ জন, ফরিদগঞ্জে ৩৮ জন, হাজীগঞ্জে ১৪ জন, মতলব দক্ষিণ ১২ জন, কচুয়ায় ১২ জন, শাহরাস্তিতে ১২ জন, মতলব উত্তরে ১০ জন ও হাইমচরে ৫ জন। জেলায় করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের।
এদিকে চাঁদপুরে নমুনা সংগ্রহে নিয়োজিত দুই স্বাস্থ্যকর্মীর একজন করোনায় আক্রান্ত, অন্যজন করোনার উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ হয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকায় বিকল্প আর কোনো স্বাস্থ্যকর্মী নেই। এমন পরিস্থিতিতে সর্বাধিক করোনা শনাক্ত হওয়া চাঁদপুর সদর উপজেলায় নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এর ফলে সদর উপজেলায় বাসা-বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা বন্ধ হয়ে গেছে।
একইসঙ্গে করোনার উপসর্গ নিয়ে বাসা-বাড়িতে মারা যাওয়া লোকজনের নমুনা সংগ্রহ করাও আর সম্ভব হচ্ছে না। মঙ্গলবার বালিয়ায় এমন একজনের মৃত্যুর খবর শুনে দাফনের জন্য বিশেষ টিম পাঠালেও মৃতের নমুনা সংগ্রহ করতে পারেনি সদর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে সদর হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহ অব্যাহত রয়েছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজেদা বেগম পলিন বলেন, করোনা পরীক্ষায় নমুনা সংগ্রহের মতো দক্ষ ল্যাব টেকনোলজিস্ট আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগে ছিল না। সিভিল সার্জনকে অনুরোধ করে চাঁদপুর টিবি (যক্ষা) ক্লিনিকের একজন ল্যাব টেকনোলজিস্টকে ডেপুটেশনে এনে আমরা এতদিন নমুনা সংগ্রহ করছিলাম। কিন্তু সেই ল্যাব টেকনোলজিস্টের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে আমরা তার নমুনা পরীক্ষা করালে রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তাই তাকে ১৪ দিনের জন্য আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। তার সহকারী হিসেবে যিনি কাজ করে আসছিলেন তিনিও অসুস্থ। তাছাড়া আক্রান্ত ল্যাব টেকনোলজিস্টের সঙ্গে কাজ করায় তাকেও হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আজ মঙ্গলবার আমাদের আরেকজন পিএলসিএ পদধারী স্বাস্থ্যকর্মীর রিপোর্টও করোনা পজিটিভ এসেছে। এ অবস্থায় বিকল্প কোনো স্বাস্থ্যকর্মী না থাকায় বাধ্য হয়েই আমরা আজ (মঙ্গলবার) থেকে করোনা টেস্টের নমুনা সংগ্রহ বন্ধ করে দিয়েছি। তারা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত এই কাজ বন্ধ থাকবে। তাদের দু’জনের একজন সুস্থ হলেই আমরা পুনরায় কার্যক্রম শুরু করতে পারব।
ইকরাম চৌধুরী/এফএ/এমএস