ছেলের দুশ্চিন্তায় মারা যাওয়া সেই মাও করোনা আক্রান্ত ছিলেন
মেহেরপুরের গাংনীতে মৃত্যুবরণকারী বৃদ্ধা জোবাইদা খাতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। নমুনা পরীক্ষায় তার কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে বলে বুধবার রাতে নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দিন। এর আগে ওই বৃদ্ধার পরিবারের ৩ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন।
এছাড়াও ২৪টি নমুনা পরীক্ষায় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের এক মেডিকেল অফিসারের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯৭। সুস্থ হয়েছেন ৩৮ জন আর মৃতের সংখ্যা ৬।
জানা গেছে, গাংনী পশু হাসপাতাল পাড়ার মৃত আব্দুল গনির স্ত্রী জোবাইদা খাতুন মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। করোনা আক্রান্ত ছেলের দুশ্চিন্তায় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে দাবি করেন তার ছেলেরা। তবে মৃত্যুর আগে করোনাভাইরাস উপসর্গ থাকা এবং তার পরিবারের তিনজন সদস্য আক্রান্ত থাকায় নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। এছাড়া তার মরদেহ বিশেষ ব্যবস্থায় দাফন করা হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৩ জুন ওই বৃদ্ধার বড় ছেলের স্ত্রী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। তিনি একজন স্বাস্থ্য সহকারী। তার বাড়ি লকডাউন করে পরিবারের লোকজনের নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। নমুনা পরীক্ষায় বৃদ্ধার মেজ ছেলে ও বড় ছেলের মেয়ের কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়। শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় বৃদ্ধার ছেলেকে ওইদিন রাতেই মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। আক্রান্ত অপর দুজন বাড়িতে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।
পরিবারের সদস্যদের নমুনা নেয়ার সময় ওই বৃদ্ধার নমুনা নিতে চেয়েছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু পরিবারের লোকজনের জোর আপত্তি এবং বাধার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। কোনোমতেই নমুনা সংগ্রহ করতে দেননি তার ছেলেরা। এনিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
বৃদ্ধার মৃত্যুর পরে আফসোস প্রকাশ করেন তারা। নমুনা পরীক্ষা করা গেলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেত বলে মন্তব্য চিকিৎসকদের।
আসিফ ইকবাল/এফএ/পিআর