কুড়িগ্রামে কমতে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কুড়িগ্রাম
প্রকাশিত: ০৪:২৫ এএম, ২৮ জুলাই ২০২০

কুড়িগ্রামে কমতে শুরু করেছে ধরলা নদীর পানি। এছাড়াও কমে যাচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদের পানিও। ধরলা নদী অববাহিকার পানিবন্দি পরিবারগুলোর মধ্যে অনেকেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। বন্যার্তরা সাময়িক পানিবন্দি অবস্থা থেকে কিছুটা মুক্তি পেলেও এখন ভাঙা বাড়িঘর ও সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

এছাড়াও আসন্ন ঈদের এই সময়টাতে তারা পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বানভাসি কৃষকরা আমনের বীজতলা নিয়ে বিপাকে রয়েছেন।

সোমবার বিকেল পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৬৩ ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৪১ এবং ধরলা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

সোমবার দুপুরে জেলার বন্যা ও করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জেলার সার্বিক বন্যা ও করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এবং জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কুড়িগ্রামে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঈদ ও কোরবানির হাটসহ জনসমাগম কমাতে সংবাদ সম্মেলনে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে দোকানপাট বন্ধ রাখা, জনসমাগম কমাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদারকরণ এবং ম্যাজিস্ট্রেসি মোবাইল টিম দেখভাল করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এখন পর্যন্ত কুড়িগ্রামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩৭ জন। মারা গেছেন ৬ জন এবং আইসোলেশনে রয়েছেন ২০৭ জন।

এদিকে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুর্গতরা যাতে কষ্ট না পায় সে জন্য গণমাধ্যমকর্মীসহ সকলের সহযোগিতা চাওয়া হয়। প্রথমদফা বন্যায় ৯টি উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের মোট ১৬ হাজার ১০০ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত এবং ১১ জন পানিতে ডুবে মারা যায়। দ্বিতীয় দফা বন্যায় ৫৬টি ইউনিয়নে ৬৩ হাজার ১৩০টি পরিবার পানিবন্দি হয়েছে বলে জানানো হয়। বন্যায় পানিতে ডুবে মারা যায় ৮ জন। সর্বগ্রাসী বন্যায় ৩২টি পয়েন্টে সাত কিলোমিটার নদীভাঙন হয়েছে। বন্যায় বীজতলা, আউশ, পাট, মরিচ ও শাকসবজির ক্ষতি হয়েছে প্রায় সাত হাজার ৭৬৭ হেক্টর জমিতে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বন্যার্তদের সহযোগিতায় রেসকিউ টিম, ৪৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র, ৩৬টি গুচ্ছগ্রাম, ২৪টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাক প্রস্তুত করা হয়। স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ১০টি এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ৭৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য থেকে দুটি মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ১৬০টি নলকূপ পরিদর্শন, দুটি নলকূপ স্থাপন, চার হাজার ২৭০টি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ৬৮টি হ্যারিকেন সরবরাহ করা হয়।

বর্তমানে ১৩২টি আশ্রয়কেন্দ্রে তিন হাজার ৮৫৬টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। সৃষ্ট বন্যায় এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজার পরিবারকে ত্রাণসামগ্রী দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ঈদ উপলক্ষে চার লাখ ২৮ হাজার ৫২৫টি পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

নাজমুল হোসেন/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।