গাংনীতে বিষ দিয়ে এক মাসে ৫০ লাখ টাকার মাছ নিধন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর
প্রকাশিত: ০৬:৪০ পিএম, ০৯ জানুয়ারি ২০২১

স্বচ্ছলতা ফেরাতে নিজের দেড় বিঘা জমিতে পুকুর কেটে মাছ চাষ শুরু করেছিলেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার যুগির গোফা গ্রামের যুবক আসাদুজ্জামান। প্রায় ৫০ হাজার টাকার মাছের পোনা ছেড়েছিলেন তিনি। পোনাগুলো বেশ বড় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন তিনি দেখেন , পুকুরের মাছ মারা যাচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে ভেবেছিলেন আবহাওয়ার কারণে এটা ঘটছে। পরে পুকুরের পানি পরীক্ষা করে দেখেন, বিষ প্রয়োগের ফলে পুকুরের সব মাছ মারা গেছে। এতে অন্তত ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে তার।

ঘটনাটি গেল বছরের ২৫ ডিসেম্বরের। তবে নিরাশ না হয়ে পুকুরের পানি সেচে নতুনভাবে আবারও মাছ চাষ শুরু করেছেন আসাদুজ্জামান। শুধু আসাদুজ্জামান না, গেল এক মাসে গ্রামের ছয়জন মাছচাষির পুকুরে গোপনে বিষ প্রয়োগে মাছ নিধন করা হয়েছে।

যুগির গোফা গ্রামের আব্দুল লতিফ জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর সকালে তিনি দেখতে পান, পুকুরের মাছ মরে ভেসে উঠেছে। প্রথমে এটি পানির অক্সিজেন কমে যাওয়ার বিষয়টি মনে করলেও পরে দেখেন, পাঁচদিনের ব্যবধানে পুকুরের সব মাছ মরে গেছে। এতে তার ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৮ লাখ টাকা।

jagonews24

একইভাবে গ্রামের ঠান্ডু মিয়ার ২০ লাখ টাকার, আনিছ ও ইদ্রিসের ৮ লাখ খলিল মেম্বরের ১০ লাখ ও দুলু মিয়ার ৫ লাখ টাকার মাছ বিষ প্রয়োগে মেরে ফেলা হয়েছে। পুকুরে পাহারা বসানোর পরও অতি গোপনে এ কাজটি করেছে দুর্বৃত্তরা। গ্রামের মাছ চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

এলাকার মাছচাষিরা জানান, এমনিতেই মাছের পোনা ও খাদ্যের দাম বেশি, এদিকে আবার মাছের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও মাছ বিক্রি করে কোনো রকমে পুুঁজি বাচানো সম্ভব হতো। অথচ দুর্বৃত্তরা কৌশলে মাছ চাষিদের ক্ষতি করে পথে বসাচ্ছে।

তারা আরও জানান, ইতোপূর্বে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা টহলে আসার কারণে চোর বা দৃর্বৃত্তরা এসব অপকর্ম করতে সাহস পেতো না। এখন টহল না থাকায় তারা সুযোগ পাচ্ছে।

jagonews24

গাংনী উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমেদ স্বপন জানান, মাছ চাষ বেশ লাভজনক হওয়ায় গাংনীর যুগির গোফা গ্রামের যুবক ও প্রবাস ফেরতরা মাছ চাষ শুরু করেন। বেশ লাভবানও হয়েছিলেন তারা। সম্প্রতি বিষ প্রয়োগে মাছ নিধনের পর অনেকেরই পথে বসার উপক্রম। বিষয়টি নিয়ে মাছ চাষিদের সাথে বৈঠক করা হয়েছে। সম্মিলিতভাবে পুকুর পাহারার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে দৃর্বৃত্তদেরকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনারও প্রক্রিয়া চলমান।

গাংনী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সাজেদুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ ক্যাম্পকে বিষয়টি জানানো হয়েছে এবং টহল জোরদারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

আসিফ ইকবাল/এমএসএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।