কারিগরি শিক্ষার প্রসারে টনির একক পদযাত্রা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শেরপুর
প্রকাশিত: ০২:৩৮ পিএম, ২৫ মার্চ ২০২১

দেশের কারিগরি শিক্ষার প্রসারে ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় একক পদযাত্রা সম্পন্ন করেছেন হাইকার মাসফিকুল হাসান টনি। ‘কারিগরি শিক্ষার প্রসার, কমাবে দেশের বেকার’ প্রতিপাদ্যে বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায় শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দরে তার এই পদযাত্রা সম্পন্ন হয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী টনি গত ২০ মার্চ সকাল ৬টায় নেত্রকোণা জেলার সুসং দূর্গাপুরের উপজেলা চত্বর থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। পরে পাঁচ দিনে তিনি মোট চারটি জেলা ঘুরে ২০০ কিলোমিটার হাইকিং সম্পন্ন করেন।

প্রথম দিন নেত্রকোনা জেলার দূর্গাপুর থেকে হালুয়াঘাট, দ্বিতীয় দিন হালুয়াঘাট থেকে ময়মনসিংহ, তৃতীয় দিন ময়মনসিংহ থেকে গোপালপুর (জামালপুর), চতুর্থ দিন গোপালপুর থেকে শেরপুর সদর এবং ৫ম দিনে শেষ নাকুগাঁও স্থলবন্দরে গিয়ে তার পদযাত্রা শেষ হয়।

টনি বলেন, কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে পত্রপত্রিকায় নতুন যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তাতে হতাশার সুর রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কারিগরি শিক্ষায় বিরাজ করছে শুভংকরের ফাঁকি। কারিগরি শিক্ষার্থীর বর্তমান হার ১৪ শতাংশ বলা হলেও আন্তর্জাতিক কারিগরি শিক্ষার সংজ্ঞা অনুযায়ী বাস্তবে এটা ৮.৪৪ শতাংশ। কারণ এ শিক্ষাব্যবস্থায় রয়েছে নানাবিধ সংকট। শ্রেণিকক্ষ, ল্যাবরেটরি ও শিক্ষকসংকট মারাত্মক। এক শিক্ষককে দিয়ে চালানো হচ্ছে দুই শিফট। এ নিয়ে শিক্ষকের মধ্যে ক্ষোভ বিদ্যমান। ফলে মানসম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা যেন সুদূরপরাহত। আমাদের এই কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিতে হবে। তবেই সত্যিকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, এই শিক্ষাব্যবস্থা থেকে মেয়েরা কেন বিমুখ হচ্ছে তা অনুসন্ধান করা উচিত। শ্রমবাজারের সঙ্গে অনেক কোর্স-কারিকুলামের কোনো সংগতি নেই। অর্থাৎ সিলেবাস এখনো যুগোপযোগী নয়। কারিগরি শিক্ষা লাভ করে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীরা তেমন একটা সুযোগ পাচ্ছে না, ফলে বাড়ছে না তাদের সামাজিক মর্যাদা। এ কারণে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের কারিগরি শিক্ষায় ভর্তি করতে উৎসাহিত হচ্ছেন না। সবকিছু নিয়েই আমাদের ভাবতে হবে। নতুবা নতুন জনশক্তি সৃষ্টিতে আমরা ব্যর্থ হব। তাই কারিগরি শিক্ষার প্রসারে আমার এই পদযাত্রা।

টনি বলেন, ময়মনসিংহ অভিযানে অনেক গ্রামে হেঁটেছি। জনসংযোগ করেছি। অনেক অঞ্চল সম্পর্কে জেনেছি। উক্ত অঞ্চলগুলোতে শিক্ষার হার বেশ কম। অর্থের অভাব ও সুযোগের অভাবে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ। তাদের জন্য যদি জেলায় জেলায় কারিগরি শিক্ষার প্রসার করা যায় তাহলে তারা নিজ জেলা থেকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারে।

মাসফিকুল হাসান টনি আনুষ্ঠানিকভাবে হাইকিং শুরু করেন ২০২০ সাল থেকে। তিনি তেঁতুলিয়া-টেকনাফ রুটে ক্রস কান্ট্রি ২০ দিনে ও শেরপুরসহ মোট ২৫টি জেলায় পদযাত্রা সম্পন্ন করেছেন। নিজ এলাকা নাটোরের বনপাড়া থেকে হাইকিং শুরু করে এখন স্বপ্ন দেখছেন আন্তর্জাতিক মানের হাইকার হওয়ার। এলবাট্রসের সৌজন্যে ও হাইকিং ফোর্স বাংলাদেশের আয়োজনে এবারের পদযাত্রায় তিনি ২০০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করলেন।

ইমরান হাসান রাব্বী/এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।