‘অঘোষিত’ বন্ধ কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্র

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি কক্সবাজার
প্রকাশিত: ০৬:৫০ পিএম, ০১ এপ্রিল ২০২১

কক্সবাজারে আবারও বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। তাই বন্ধের পথে জেলার সব পর্যটন কেন্দ্র। এরইমধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সেন্টমার্টিনের পর্যটকবাহী জাহাজগুলো। গুটিয়ে ফেলা হয়েছে সৈকতের বালিয়াড়িতে পর্যটকদের বসার জন্য সাজানো কিটকট চেয়ার।

করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে কক্সবাজার শহরে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। মাঠে নেমেছে পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে জেলা পুলিশও। এমনটি জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জাহিদ আহসান।

jagonews24

সৈকতে সি সেইফ লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার মোহাম্মদ ওসমান বলেন, ‘শুক্র-শনিবার ছুটির দিন ছাড়াও প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক ও স্থানীয় ভ্রমণপিপাসু কক্সবাজার সৈকতে আসেন। করোনাকালে সতর্কতার জন্য মাস্ক পরার কথা থাকলেও হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া সিংহভাগই মাস্কহীন বালিয়াডিতে নামে। পর্যটন স্পট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ কোথাও স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্বের বালাই না থাকায় কক্সবাজারে ফের করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। বুধবার সন্ধ্যা থেকে সৈকতে পর্যটকদের জন্য বসানো কিটকট চেয়ার গুটিয়ে ফেলা হয়েছে।’

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, ‘সচেতনতার বিষয়ে উদাসীনতার কারণে কক্সবাজারে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। যানবাহন চালক, যাত্রী ও পথচারীদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত এবং জনসমাগম সীমিত করতে জেলা প্রশাসনের মতো পুলিশও মাঠে কাজ করছে।’

jagonews24

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘আপাতত সরকারের জারি করা ১৮ নির্দেশনা মতো সৈকতে পর্যটক সমাগম সীমিত করার জন্য কাজ চলছে। আগের মতো সৈকতে জনসমাগম হতে দেয়া হচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে প্রতিদিন। করোনার প্রাদুর্ভাব তীব্রতর হতে থাকলে অন্য জেলার মতো পর্যটন কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। কক্সবাজারে পর্যটন শিল্পের পরিধি ব্যাপক হওয়ায় অনেক স্টেকহোল্ডার এখানে সম্পৃক্ত। তাই সব পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, গত এক মাসে সারাদেশের মতো কক্সবাজারেও করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এটা ক্রম ঊর্ধ্বমুখী। পরিসংখ্যান মতে গত ১ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত মোট ১৩ হাজার ৭৭ জন পরীক্ষার আওতায় এসেছেন (গড়ে ৪২২ জন)। এর মধ্যে পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ৫১৯ জনের। কক্সবাজারে করোনা পরিস্থিতি কঠিনের দিকে যাচ্ছে। এ মুহূর্তে সবার সচেতন হওয়া জরুরি।

করোনা ভ্যাকসিনের বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, কক্সবাজারে করোনার টিকা এসেছে ৮৭ হাজার ২২৮টি। প্রয়োগ করা হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার জনকে। ৯ কেন্দ্রে ২৬টি বুথে এ টিকা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

jagonews24

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক, ট্রপিক্যাল মেডিসিন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ও করোনা প্রতিরোধ সেলের চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহজাহান নাজির বলেন, ‘কক্সবাজারে রোহিঙ্গাসহ ৩৫ লাখ মানুষের বাস। গত বছর মার্চ মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত টানা তিন মাস করোনা দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে। এবারও একই সময়ে করোনার প্রকোপ বাড়ছে। সরকারি নির্দেশনা না মানলে চরম বিপর্যয় ঘটতে পারে।’

করোনা রোগীকে স্বেচ্ছায় সেবা দেয়া বেসরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পুরো মার্চ মাসেই করোনা রোগীর আধিক্য বেড়েছে। কোনো লক্ষণ ছাড়াও অনেকে ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। তারাও পরে করোনা পজিটিভ হচ্ছেন। এটি উদ্বেগজনক।’

সায়ীদ আলমগীর/এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।