কৃষকের ছেলের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগে আনন্দে ভাসছে সবাই

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি গোপালগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:২৪ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০২১

দারিদ্র্যকে জয় করে মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার রামশীল গ্রামের চয়ন অধিকারী। কৃষক বাবার দুই ছেলের মধ্যে ছোট চয়ন অধিকারী এ বছর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।

চয়ন অধিকারীর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগের খবরে আনন্দের জোয়ার বইছে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের মাঝে।

রামশীল গ্রামের কৃষক মনীন্দ্রনাথ অধিকারী স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে কৃষিকাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন।

ছোটবেলা থেকেই চয়ন অধিকারী পড়াশোনায় খুবই আগ্রহী ছিল। আর্থিক অস্বচ্ছলতাকে উপেক্ষা করেই অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে ২০১৮ সালে পূর্ব কোটালীপাড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। এরপর নিজ গ্রামের রামশীল কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়ে এইচএসসি পরীক্ষাতেও জিপিএ-৫ পায়।

অদম্য মেধাবী চয়ন অধিকারীর ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই প্রস্তুতি নিতে থাকে মেডিকেলে পরীক্ষার। অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল হিসেবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে এমবিবিএসে ভর্তির সুযোগও পায় চয়ন অধিকারী।

চয়নের এই সাফল্য অর্জনে রামশীল কলেজের অধ্যক্ষ জয়দেব চন্দ্র বালা বলেন, ছেলেটা যখন এসএসসি পাস করে আমার কাছে আসে তখনই ওর মধ্যে আমি আলাদা কিছু অনুভব করেছিলাম। বুঝতে পেরেছিলাম এই ছেলেটার বড় কিছু হওয়ার অদম্য ইচ্ছাশক্তি আছে। এরপর থেকেই আমি এবং আমার কলেজের প্রতিটি শিক্ষকই সন্তানের মতো ওকে পরিচর্যা করেছি। এমনকি আমার কলেজে পড়াশোনার জন্য একটি অর্থও চয়নের কাছ থেকে নেইনি আমরা। আমি চয়নকে আরও বলেছি যে, মেডিকেলে পড়ার সময়ও যদি কখনো কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হয় আমি সর্বদাই ওর পাশে আছি।

চয়নের বাবা মনীন্দ্রনাথ অধিকারী বলেন, আমার ছেলে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে এটা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় খুশির খবর। আমার ছেলেটা ছোটবেলা থেকেই চাইত জীবনে বড় হয়ে মানুষের সেবা করতে। আজ সেই পথে আরও অনেকদূরে এগিয়ে গেল।

তিনি বলেন, আমার ছেলেকে যে পরিবেশ দেয়া উচিৎ ছিল আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে দিতে পারিনি। তবুও ওর অদম্য ইচ্ছায় আজ সে সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে।

এ বিষয়ে চয়ন অধিকারীর কাছে তার অনুভূতির কথা জানতে চাইলে সে জানায়, আমি ধন্যবাদ দিতে চাই আমার পরিবার ও প্রাইমারি থেকে শুরু করে কলেজসহ আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ও শিক্ষিকাদেরকে তাদের উদ্দীপনা, অনুপ্রেরণা ও উৎসাহের জন্য। আমি সবার কাছে আশীর্বাদ কামনা করছি আমি যেন অত্যন্ত সফলতার সাথে মেডিকেল পড়া শেষ করে এই মহান পেশায় নিজেকে সমর্পিত করে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে অবদান রাখতে পারি।

এফএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।