স্ত্রী নির্যাতন ও চুরির অভিযোগে বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা
স্ত্রীকে নির্যাতন ও শ্বশুরবাড়িতে চুরির অভিযোগে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় এক বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্ত বিজিবি সদস্য হামিদুর রহমান উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের গগডা ভুইয়াপাড়া গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে। তিনি ১৪ বিজিবি নওগাঁর পত্নীতলায় কর্মরত।
মামলার বিবরণ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে হামিদুর রহমানের সঙ্গে একই উপজেলার মহি উদ্দিনের মেয়ে এর মেয়ে মাকসুদা আক্তারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। মাকসুদা নেত্রকোণা সরকারী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী।
বিয়ের কিছুদিন পরেই স্ত্রীকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন হামিদুর। এক পর্যায়ে তিনি ফিসারি ব্যবসার নামে শ্বশুরের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা নেন। একসময় শ্বশুরবাড়ি থেকে সেই টাকা ফেরত চাওয়া হয়। কিন্তু হামিদুর আবারও টাকার জন্য স্ত্রীকে চাপ দিতে থাকেন। এতে অপারগতা জানালে মাকসুদাকে নির্যাতন করতে শুরু করেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
নির্যাতনের বিষয়টি বিজিবি মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করে জানান মাকসুদা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ছুটি নিয়ে বুধবার (৫ মে) দুপুরে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন হামিদুর এবং তিনি স্ত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মাকসুদা যেতে না চাইলে তাকে মারপিট করা হয়। থামাতে গেলে শাশুড়ি এবং শ্যালককেও মারধর করেন হামিদুর। এ সময় তার বড়ভাইও হামিদুরের সঙ্গে ছিলেন।
এ বিষয়ে হামিদুর রহমানের শ্বশুর মহি উদ্দিন বলেন, ‘আমার বাড়িতে এসে মেয়েকে জোর করে নিয়ে যেতে চেয়েছিল তারা। যেতে না চাইলে তাকে মারধর করা হয়। ফেরাতে গেলে আমার স্ত্রী ও ছেলেকেও মারপিট করে। এ সময় আমার ঘরে থাকা ১ লাখ টাকা, ৭ ভরি স্বর্ণ ও একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় সে।’
অভিযুক্ত হামিদুর রহমানের বড় ভাই আবুল কাশেম খান জানান, ‘দু-তিন দিন আগে হামিদুর ছুটিতে এসে বুধবার দুপুরে স্ত্রীকে বাড়িতে আনতে শ্বশুরবাড়ি যায়। এ সময় স্বামীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি আসতে প্রস্তুতি হন হামিদুরের স্ত্রীও। কিন্তু শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্যালক-শ্যালিকারা বাধা দেন এবং হামিদুরকে গালিগালাজ শুরু করেন। এর প্রতিবাদ করলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার ওপর চড়াও হয় এবং একপর্যায়ে তাকে মারপিট করতে শুরু করে। পরে আহত হামিদুর স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। সন্ধ্যায় তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এ ঘটনায় মাকসুদা আক্তারের মা বেগম আমেনা সরকার বাদী হয়ে কেন্দুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, ‘বিজিবি সদস্য হামিদুর রহমানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর আগে ওই বিজিবি সদস্যও মারপিটের অভিযোগে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।’
এইচ এম কামাল/এসএস/জিকেএস