স্ত্রীর ভালোবাসায় তুচ্ছ করোনাভীতি
![স্ত্রীর ভালোবাসায় তুচ্ছ করোনাভীতি](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2019November/saral-20210514144736.jpg)
৭০ বছরের কৃষক বৃদ্ধ সরল মিয়া। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসিন্দা। এক সপ্তাহ আগে তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তিনদিন আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়।
বৃদ্ধ সরল মিয়া বিয়ের পর স্ত্রীকে ছাড়া কখনো ঈদ করেননি। করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় এবার হাসপাতালের আইসোলেশনে স্ত্রীকে ঈদ করতে হচ্ছে। তাই ঈদের দিন বাড়িতে স্ত্রীকে না দেখে থাকতে পারেননি তিনি। ছুটে গেছেন হাসপাতালে স্ত্রীকে দেখতে। কিন্তু হাসপাতালের গ্লাসে ঘেরা আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগী, চিকিৎসক ও সেবাদানকারী নার্স ছাড়া কারো প্রবেশের অনুমতি নেই। তাই সরল মিয়াকেও আইসোলেশন ওয়ার্ডে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি। কিন্তু কোনো কিছুই তাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি। স্ত্রীকে দেখতে গ্লাসে ঘেরা আইসোলেশনে ঢুকে পড়েন তিনি।
শুক্রবার (১৪ মে) ঈদের নামাজের পর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আইসোলেশনে অবস্থান করেন সরল মিয়া। পরে বের হয়ে বাড়িতে যান।
বৃদ্ধ সরল মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, করোনা নিয়ে ভয় করবো কেন? আল্লাহ দিলে কী করা যাবে। মরণ তো একদিন হবেই। সব আল্লাহর ইচ্ছা।
তিনি বলেন, আমার সন্তানরা বাড়িতে রয়েছেন। তারা তাদের মায়ের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। বাড়িতে ভালো লাগছিল না। তাই তাকে (স্ত্রীকে) হাসপাতালে দেখতে আসলাম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন বলেন, করোনার চিকিৎসায় আইসোলেশন সেন্টারে প্রবেশ ঠিক নয়। বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যারা আইসোলেশন থেকে বাড়িতে ফিরে যাবে, তারা নিজেরা সংক্রমিত হলে পরিবারের সদস্যদের জন্য ঝুঁকি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ঈদের দিন চারজন চিকিৎসা নিচ্ছেন। নেগেটিভ আসায় একজন আজ রিলিজ পাবেন। ঈদের দিন আইসোলেশন ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা রোগীদের তিন বেলা উন্নত খাবার দেয়া হচ্ছে।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এএইচ/এমকেএইচ