২১ লাখ মানুষের হবিগঞ্জে নেই কোনো আইসিইউ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি হবিগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:১৮ পিএম, ০২ জুন ২০২১

হবিগঞ্জ প্রতিদিনই বাড়ছে করোনার রোগী। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা একেবারেই কম। প্রায় ২১ লাখ মানুষের এ জেলায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নেই কোনো আইসিইউ।

এছাড়া জেলার একমাত্র সদর আধুনিক হাসপাতালে নেই পর্যাপ্ত অক্সিজেনের মজুত। নেই কোনো লিকুইড অক্সিজেনের প্ল্যান্ট। অক্সিজেন সরবরাহ করা হয় সিলিন্ডারের মাধ্যমে। এমতাবস্থায় ঝুঁকি নিয়েই সেবা নিচ্ছেন আক্রান্তরা।

এদিকে ভারতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার একমাত্র বাল্লা স্থলবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে জেলার ১০ জন প্রবেশ করেছেন। তারা ইতোমধ্যে কোয়ারেন্টাইন শেষে বাড়ি ফিরেছেন।

ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জ্বল জানান, সদর আধুনিক হাসপাতালের নতুন ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় করোনা রোগীদের জন্য ১০০টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন রয়েছে। বড় সিলিন্ডারের মাধ্যমে তা দিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। কিন্তু লিকুইড অক্সিজেনের ব্যবস্থা নেই। যদি রোগী বেড়ে যায় তবে সমস্যা হবে। পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ সম্ভব নাও হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, গুরুতর অবস্থা নাহলে বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নেয়ার জন্য রোগীদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এখানে আক্রান্তের হার ১৪ দশমিক ২ শতাংশ। তবে মৃত্যু হার এখনও নিয়ন্ত্রণে আছে। যদিও ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় আমাদের জেলার নাম নেই। তবুও ঝুঁকির সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়েও দেয়া যায় না। এছাড়া সদর হাসপাতালে একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন প্রক্রিয়াধীন।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহমেদ জানান, এ জেলায় দীর্ঘ ভারতীয় সীমান্ত এলাকা রয়েছে। যদিও স্থলবন্দর বন্ধ, তবুও ঝুঁকি একেবারেই নেই তা বলা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, এখানে মেডিকেল কলেজ রয়েছে। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতাল রয়েছে। কিন্তু কোনো আইসিইউ নেই। এমনকি নেই লিকুইড অক্সিজেনের ব্যবস্থাও। এ জেলার ২১ লাখ মানুষকে এসব সুবিধা নেয়ার জন্য সিলেটে ছুটে যেতে হয়।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সদর আধুনিক হাসপাতালে দু’টি করোনা ইউনিটে ১০০ শয্যা প্রস্তুত করা হয়েছে। শায়েস্তাগঞ্জ ও সদর উপজেলা বাদে অন্য সাতটি উপজেলার প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঁচটি করে মোট ৩৫ শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

রোববার (৩০ মে) পর্যন্ত জেলা সদর হাসপাতালে সাতজন করোনা রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় দু’জন ভর্তি হয়েছেন। তারা প্রত্যেকেই শ্বাসকষ্ট হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হন মূলত অক্সিজেন সেবা নেয়ার জন্য।

এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে কোনো রোগী ভর্তি নেই। এগুলোতে নেই সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থাও।

এছাড়া আইসিইউ নেই জেলার কোনো হাসপাতালে। সবগুলোতেই সিলিন্ডারের মাধ্যমে অক্সিজেন দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেক্ষেত্রে যদি হঠাৎ সিলিন্ডার শেষ হয়ে যায় তবে তাৎক্ষণিক সিলিন্ডার রিফিল করে অক্সিজেন সরবরাহ করা অসম্ভব হয়ে যাবে।

জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন দুই হাজার ৫০৪ জন। সুস্থ হয়েছেন হয়েছেন ৭২ জন। আর মারা গেছেন ১৮ জন।

এদিকে গত ৫ ও ৭ মে জেলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৫ জন করে মোট ১০ জন ভারত থেকে জেলায় ফিরে আসেন। তাদেরকে চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রেখে বাড়ি পাঠানো হয়।

এখলাছুর রহমান খোকন/এসএমএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।