নওগাঁয় চলছে এক সপ্তাহের লকডাউন
নওগাঁয় জেলা প্রশাসনের এক সপ্তাহের বিশেষ লকডাউন শুরু হয়েছে। জেলায় পুলিশ রয়েছে সতর্ক অবস্থায়। এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়।
এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিধিনিষেধ অমান্য করে চলাচল করা মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহনকে (সিএনজি ও ভ্যান) জরিমানা করা হচ্ছে।
এর আগে বুধবার (২জুন) করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ এক সংবাদ সম্মেলনে এক সপ্তাহের লকডাউনের ঘোষণা দেন। যা আগামী ৯ জুন রাত পর্যন্ত চলবে।
জানা যায়, নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় করোনা সংক্রমণের হার বেড়েই চলেছে। নিয়ামতপুর উপজেলার পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় সেখানে করোনা সংক্রমণের হার বেশি রয়েছে।
এদিকে গত ৩০ মে জেলায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এক স্মারকে নির্দেশনা দেয়া হয়। সে নির্দেশনা মোতাবেক গত ১ জুন জেলার করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয় শীর্ষক এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিদ্ধান্তক্রমে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে ১৫টি নির্দেশনা গ্রহণ করা হয়।
নওগাঁ পৌরসভা ও নিয়ামতপুরে সকল প্রকার গণপরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও নেয়া হয়। এছাড়া জেলা শহরের সঙ্গে বাকি ১০ উপজেলার যোগাযোগ থাকায় নওগাঁ পৌরসভাতেও সংক্রমণ বেড়েছে। এ কারণে জেলা শহরসহ অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পুলিশের পক্ষ থেকে শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, বাইপাস সড়ক, দয়ালের মোড়, মুক্তির মোড়, তাজের মোড়, ঢাকা বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। অপ্রয়োজনে যারা ঘুরাঘুরি করছে তাদের বাসায় ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
শহরের জনকল্যাণ মহল্লার রিকশাচালক হোসেন আলী বলেন, ‘বাড়িতে পাঁচজন সদস্য রয়েছে। লকডাউনে রাস্তায় রিকশা নিয়ে বেরিয়েছি। সকাল থেকে ১০০ টাকা ভাড়া পেয়েছি। এরমধ্যে পুলিশ একবার ধরে বাড়ি যেতে বলেছে। কিন্তু বাড়িতে বসে থাকলে তো আর পেট চলবে না। এজন্য মূল রাস্তায় না গিয়ে শাখা রাস্তাগুলোতে থাকছি। লকডাউনে যাত্রীও কম রয়েছে’।
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) কে এম এ মামুন খান চিশতী বলেন, লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যারা বাইরে বের হচ্ছেন তাদের বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যারা প্রয়োজন ছাড়াই যানবাহনে যাতায়াত করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি, কেউ যেন প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হন। নিত্য প্রয়োজনীয় দোকানপাট ছাড়া যেন অন্য কোনো দোকান যাতে না খোলা হয় সেদিকেও বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে।
আব্বাস আলী/এসএমএম/জেআইএম