ঠাকুরগাঁওয়ে হাসপাতালে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত: ০৬:০১ এএম, ০৮ জুলাই ২০২১

ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা সংক্রমণ। সংক্রমণ ঠেকাতে প্রশাসনের কঠোর তৎপরতা দেখা গেলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে খুব একটা সচেতনতা নেই। এর মধ্যে নানা অব্যবস্থাপনার কারণে ঠাকুরগাঁওয়ে হাসপাতাল থেকেই করোনা সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ঠাকুরগাঁও জেলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৬০৬ জন ও মারা গেছেন ১০৪ জন।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল ঘুরে রোগী, তাদের স্বজন, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য রয়েছে নির্ধারিত করোনা ইউনিট। সাধারণ ওয়ার্ডে করোনা রোগী ভর্তির সুযোগ না থাকলেও গত চারদিন ধরে পুরুষ ওয়ার্ডে করোনা রোগী ভর্তি রয়েছে।

এক রোগীর স্বজন বলেন, ‌‘আমার বাবা মাত্র ভর্তি হয়েছেন। এসে শুনি পাশের বেডে করোনা পজিটিভ রোগী। এখন তারও করোনা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

jagonews24

করোনা রোগীদের বিভিন্ন টেস্টের জন্য প্যাথলজি বিভাগ হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় আলাদা করা হয়েছে। এখানেই রোগীদের সব পরীক্ষা হচ্ছে। কিন্তু এখনো বেশিরভাগ রোগী বাইরে থেকে বিভিন্ন টেস্ট করিয়ে আনছেন। এ ছাড়া বাইরে থেকে পোর্টেঅ্যাবল এক্সরে মেশিন দিয়ে অনেক রোগীর এক্সরে করানো হয়।

সরজমিনে দেখা যায়, করোনা রোগীর জন্য যেসব ওষুধ প্রয়োজন তা ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে সরাসরি রোগীদের কাছে সরবরাহ করছেন। এ ছাড়া করোনা রোগীর সঙ্গে যারা আছেন তারা বিভিন্ন কাজে বের হচ্ছেন, আবার হাসপাতালে ফিরছেন। এজন্যও ঠাকুরগাঁও জেলায় দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

দেখা গেছে, করোনা হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বপূর্ণ নিয়মকানুন লেখা রয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তা মেনে চলার কোনো বালাই নেই। রোগীর সঙ্গে যে স্বজনরা থাকছেন, তারা আবার ওষুধ কিনতে যাচ্ছেন দোকানে। তাদের খাবার পানি আনতে হচ্ছে বাইরের টিউবওয়েল থেকে। সামাজিক দূরত্ব বা সরকারি নির্দেশনা যেন উপেক্ষিত এ হাসপাতালে।

অন্যদিকে, ঠাকুরগাঁওয়ে লকডাউনের মধ্যেও মানুষ প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছে। রাস্তায় বের হলে খুব একটা বোঝার উপায় নেই যে লকডাউন চলছে। যদিও মানুষের চলাচল ঠেকাতে কোথাও ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে।

jagonews24

সাদেক নামে একজন বলেন, ‘রাস্তায় দেখতে এসেছি কেমন লকডাউন হচ্ছে।’ শফিকুল ইসলাম নামে অন্য একজন বলেন, ‘ঘরে বসে থাকতে ভালো লাগে না, তাই একটু রাস্তা থেকে ঘুরে যাচ্ছি।’

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা ইউনিটের রোগীর স্বজনদের অন্য ওয়ার্ডে যেতে বারণ করা হয়েছে। মানুষ সচেতন না হলে করোনা মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই প্রতিটি ওয়ার্ডে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।’

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মাহাফুজার রহমান বলেন, ‘করোনা হাসপাতালের সামনে মানুষের ঘোরাঘুরি বন্ধে অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশও দায়িত্ব পালন করছে। তারপরও অনেকেই নিয়ম মানতে চায় না। প্রয়োজনে আমরা আরও কঠোর হব।’

তানভীর হাসান তানু/ইএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।