গ্রেনেড হামলায় মাদারীপুরের হতাহতদের পরিবারের দিন কাটছে কষ্টে
কষ্টে দিন কাটছে ২১ গ্রেনেড হামলায় মাদারীপুরের নিহত ও আহতদের পরিবারগুলোর। আহত পাঁচজন এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন গ্রেনেডের স্প্লিন্টার। দীর্ঘদিন এসব স্প্লিন্টার শরীরের বিভিন্ন স্থানে থাকায় চিকিৎসার অভাবে এক একটি অংশ হয়ে পড়েছে অকেজো। ফলে ধীরে ধীরে পঙ্গুর দিকে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের অকুতোভয় এসব কর্মীরা।
এদিকে গ্রেনেড হামলার দিন নিহত হওয়ায় চারজনের পরিবার কিছুটা আর্থিক সহযোগিতা পেলেও দোষীদের রায় কার্যকর না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তারা।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলার ঘটনায় নিহত হন মাদারীপুর জেলার এক নারীসহ তিনজন। এদের মধ্যে একজন রাজৈর উপজেলার উত্তর হোসেনপুর গ্রামের যুবলীগ নেতা লিটন মুন্সি।

নিহত লিটনের বাবা আয়বুলী মুন্সি বলেন, ‘মামলার রায় হয়েছে ঠিকই। কিন্ত রায় তো কার্যকর হয় না। আগস্ট মাস আসলে আমারা যন্ত্রণায় ভুগি। আগে পরে কেউ আমাগো খোঁজ নেয় না। প্রায় দেড় বছর যাবৎ আমরা অসুস্থ, ওষুধ কেনার টাকা নাই।’
লিটন মুন্সির মা আসিরন বেগম বলেন, ‘আমার একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে ছিল লিটন। ওকে হারিয়ে আমি এখন অনেক কষ্টে দিন পার করছি। প্রায় তিন বছর ধরে আমি অসুস্থ। প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা করে ওষুধ লাগে। কেউ তো আমাকে ওষুধ কিনে দেয় না। কেউ আমাদের খোঁজও নেয় না। আমরা যে কত কষ্টে আছি, তা বলে শেষ করতে পারব না।
শুধু লিটন মুন্সিই নয়, এই ঘটনায় নিহত হন একই উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহাম্মেদ সান্টু, কালকিনি উপজেলার শ্রমিক লীগ নাসির উদ্দিন ও সুফিয়া বেগম।

নিহতের পরিবারগুলো বিভিন্ন সময়ে সহযোগিতা পেলেও তাদের রয়ে গেছে আর্থিক সংকট। আর যারা আহত হয়ে বেঁচে আছেন, তাদের দিন কাটছে যন্ত্রণায়। এর মধ্যে রয়েছেন- মাদারীপুরের কালকিনির কবির, সাইদুর, হালান হাওলাদার ও সদর উপজেলার রাম কৃষ্ণ মণ্ডল এবং হুমায়ন।
এসব পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, তাদের স্মৃতি রক্ষার জন্য কবরস্থান সংরক্ষণের। সেই সঙ্গে আর্থিক সহযোগিতার।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামালায় নিহত ও আহতদের পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করা হবে। তাদের আর্থিক সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
এ কে এম নাসিরুল হক/জেডএইচ/এমএস