দিন ভালো যাচ্ছে না ভোলার ইলিশ শিকারিদের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ভোলা
প্রকাশিত: ০৫:০৯ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০২১

ভোলায় ইলিশ আহরণে খরা যাচ্ছে জেলেদের। ভোররাত থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলছে না। কোনো কোনো জেলে এক থেকে দুটি বড় সাইজের ইলিশ পাচ্ছেন। আবার কাউকে ছয় থেকে সাতটি ছোট সাইজের জাটকা নিয়েই ফিরতে হচ্ছে। এতে করে জেলেদের জ্বালানির খরচই উঠছে না। অনেকে খরচাদি বাদে মাত্র ৫০-১০০ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।

শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকালে ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া তুলাতুলি মৎস্য ঘাটে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

jagonews24

ভোলার তুলাতুলি এলাকার জেলে ও দৌলতখান উপজেলার মদনপুর ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের বাসিন্দা মনির হোসেন জাগো নিউজকে জানান, শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে তারা ছয়জন জেলে নদীতে মাছ শিকারে নামেন। তবে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ ও চারটি জাটকা পেয়েছেন।

তিনি আরও জানান, ওই মাছ পরে তুলাতুলি মৎস্য ঘাটে ১৪০০ টাকায় বিক্রি করেন। এ টাকা থেকে দোকানে তেলের বাকি বাবদ ১১০০ টাকা পরিশোধ করেছেন। অবশিষ্ট ৩০০ টাকা তারা ছয়জন ভাগ করে নিয়েছেন। এতে প্রতিজনের ভাগে ৫০ টাকা পড়েছে।

jagonews24

সদরের ধনিয়া ইউনিয়নের তুলাতুলি গ্রামের জেলে মো. শিপন ও আব্দুর রহমান মাঝি বলেন, প্রতিদিন ভোররাত থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নদীতে যাই। কোনো দিন ২-৩টি বড় সাইজের ইলিশ পাই। আবার কোনোদিন ৫-৬টি জাটকা পাই। তা বিক্রি করে সব খরচ বাদে আমরা একেকজন ১০০-১৫০ টাকার বেশি পাই না।

‘ওই টাকা দিয়ে কোনোমতে মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানদের জন্য চাল-ডাল কিনে নিয়ে যাই। কিন্তু এনজিওর কিস্তির টাকা দিতে পারি না। কিস্তির টাকা না দিতে পারায় সমিতি লোকজন বারবার বাড়িতে আসে। আমরা ভয়ে পালিয়ে বেড়াই’, যোগ করেন জেলে শিপন ও আব্দুর রহমান।

jagonews24

মাইনুল মাঝি ও সত্তার মাঝি জাগো নিউজকে বলেন, আমরা মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর জেলেরা নদীতে মাছ না পেয়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করছি।
তুলাতুলি মৎস্য ঘাটের আড়তদার মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, চলতি ইলিশের ভরা মৌসুমের শুরুর দিকে ঢাকার পাইকারদের কাছ থেকে দাদনে (সুদে) টাকা এনে জেলেদের দিয়েছি। কথা ছিল জেলেরা ভরা মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ শিকার করে অল্প অল্প করে দাদনের টাকা পরিশোধ করবেন। কিন্তু বর্তমানে জেলেদের জালে এক-দুটির বেশি বড় ইলিশ ধরা পড়ছে না। কেউ কেউ ৪-৫টি জাটকা নিয়েই ঘাটে আসেন। এতে করে আমরা ঢাকায় মাছ পাঠাতে পারছি না।

jagonews24

তিনি বলেন, ‘ঢাকার পাইকাররা অনেক চাপ দিচ্ছে কিন্তু কিছু করার নেই। নদীতে মাছ না পাইলে মাছ পাঠাবো কীভাবে।’

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম জানান, বর্তমানে জেলেরা নদীতে আশানুরূপ ইলিশ পাচ্ছেন না। তবে আমরা আশা করছি, এ মাসের শেষের দিকে বা সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে জেলেরা আশানুরূপ ইলিশ শিকার করতে পারবেন।

জুয়েল সাহা বিকাশ/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।