তিস্তায় বিলীন আছিয়ার মাথা গোঁজার ঠাঁই

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ০৬:০৮ পিএম, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২১

এদিক ওদিক ছোটাছুটির পর মাস খানেক আগে তিস্তার পাড়ে ঘর বেঁধেছিলেন ষাটোর্ধ্ব স্বামীহারা আছিয়া বেগম। দুই ছেলেকে নিয়ে স্পার বাঁধের পাশে মাথা গোঁজার জায়গা খুঁজে নেন তিনি। কে জানত একরাতেই তিস্তায় বিলীন হয়ে যাবে সে ঘর।

আছিয়া বেগম বলেন, তিস্তার চরে বাড়ি ছিল। প্রথম দিকের বন‌্যায় অন্তত ৩০ পরিবারের ছোট্ট পাড়াটি বন‌্যায় মিশে যায়। সে সময় পরিবারসহ বাঁধের ধারে ঘর করেছিলাম। কিন্তু হয়নি শেষ রক্ষা। তিস্তায় বিলীন হয়ে যায় সে ঘরও।

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ী ২ নম্বর স্পার বাঁধ ভেঙে আছিয়ার মতো সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে অনেক পরিবার। তলিয়ে গেছে শতশত একর ফসলি জমি।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা সামছুল হক জাগো নিউজকে বলেন, এ আবাসনে ৩৯ পরিবার ছিল। গেল বন‌্যায় চরের এ গ্রামটি নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় আবাসনে আরও প্রায় ৫০টির বেশি পরিবার আশ্রয় নেয়। সব মিলে এখানে প্রায় তিন শতাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

jagonews24

মনুরুদ্দীন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এবারের বন‌্যায় কেউ মারা যাননি, গবাদীপশুরও কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে আবাদি জমি শেষ। এখানে প্রায় কয়েকশ বিঘা জমি ফসলসহ তিস্তার পানিতে তলিয়ে গেছে।

আবাসনের বাসিন্দা শামীম বলেন, প্রায় সাতদিন পর এলাকায় অসহায়দের দেখতে আসেন ইউএনওসহ প্রশাসনের লোকজন। এসময় তারা গৃহহীন কিছু পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা দেন। এছাড়া আর কোনো সহায়তা আমরা পাইনি।

চাপানী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস‌্য (মেম্বার) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাঁধ ভাঙার পর ১৮ পরিবারকে তিন হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমরা এখন তালিকা করে বাকিদের কাছে সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন‌্য কাজ করে যাচ্ছি।

চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম‌্যন আমিনুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে কাজ করে যাচ্ছি।

এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়শ্রী রাণী রায় জাগো নিউজকে বলেন, ১৮ পরিবারকে তিন হাজার টাকার নগদ অর্থ সহায়তা ও সেখানে তিন টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।

আরএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।