অপহরণের পর শিশু হত্যায় ছেলের যাবজ্জীবন, বাবা-মায়ের কারাদণ্ড
দিনাজপুরে শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে মরদেহ গুমের ঘটনায় ছেলেকে যাবজ্জীবন ও বাবা-মাকে তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে দিনাজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও সিনিয়র জেলা জজ শরীফ উদ্দিন আহমেদ এ রায় প্রদান করেন।
রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড এবং বাকি দুই আসামিকে তিনহাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও একমাস করে কারাদণ্ড প্রদান করে।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- হাকিমপুর উপজেলার মুহাড়াপাড়া গ্রামের আব্দুস সালাম ওরফে সামিউল (২৫)। অপর দুই আসামি হলেন- সামিউলের বাবা আমজাদ হোসেন (৫৫) ও মা ছানোয়ারা বেগম (৪৫)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১১ এপ্রিল হাকিমপুর উপজেলার মুহাড়াপাড়া গ্রামের আবতাহী আল রশিদকে (৪) অপহরণ করে মোবাইলে এসএমএনের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে শিশুর বাবা হাকিমপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ আজাদ বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামি সামিউলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় সামিউল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে টিভি সিরিয়াল ক্রাইম পেট্রোল দেখে অল্প সময়ে বড়লোক হওয়ার জন্য শিশু আবতাহীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির কথা স্বীকার করেন। পরে শিশুকে হত্যা করে মরদেহ বস্তাবন্দী করে গুম করে রাখার বিষয়টি স্বীকার করেন পুলিশের কাছে। এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা বাদী হয়ে হাকিমপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলা করেন।
মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত আসামি সামিউলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন ধারায় জরিমানা ও কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে সামিউলের বাবা-মাকে তিনবছর করে কারাদণ্ডসহ তিন হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও একমাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন।
এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৈয়বা বেগম বলেন, সাক্ষী-প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা হত্যার বিষয়টি প্রমাণে সমর্থ হয়েছি। এ রায়ে আমরা খুশি।
এমদাদুল হক মিলন/আরএইচ/এএসএম