প্রতিপক্ষকে সমর্থন করায় একজনের রাস্তা বন্ধ অপরজনের গাড়ি বন্ধ
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরপুর দুর্গাপুর ইউনিয়নের সিংদহ গ্রামের এবার ৩য় ধাপের ইউপি নির্বাচনে মন্ডল আর বিশ্বাস পরিবার থেকে দুজন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। ভোটে তারা দুজনই পরাজিত হন। এরপর থেকে এক প্রার্থীর সমর্থকের বাড়ির রাস্তায় বেড়া দেওয়া হয়েছে। আর অপর প্রার্থীর সমর্থকের বাড়িতে রিকশা ভ্যান বা মাঠের ফসল গাড়িতে নিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
গত ২৮ নভেম্বর কালীগঞ্জের ১১টি ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়। এতে সুন্দরপুর দুর্গাপুর ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী ছিলেন ছয়জন। এর মধ্যে স্থানীয় মন্ডল পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ইউনুচ আলী মন্ডল। বিশ্বাস পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন লিটন বিশ্বাস।
জানা গেছে, বিশ্বাস পরিবারের সদস্য কফিল উদ্দিন নির্বাচনে মন্ডল পরিবারের ইউনুচ আলীর পক্ষ হয়ে কাজ করেন। আর মন্ডল পরিবারের সদস্য বাবুর আলী মন্ডল লিটন বিশ্বাসের পক্ষে কাজ করেন।
ভোট শেষে দেখা যায়, ইউনুচ আলী তালা প্রতীক নিয়ে ১৬৩ ভোট পান। লিটন বিশ্বাস আপেল প্রতীক নিয়ে পান ৩১২ ভোট। তবে উভয় প্রার্থীকে পরাজিত করে শেখ পরিবারের কওছার আলী মোরগ প্রতীক নিয়ে ৩৩৫ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। এই ফলাফলের পর কফিল উদ্দিন বিশ্বাস ও বাবুর আলী মন্ডলের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়।
কফিল উদ্দিন জানান, তিনি বিশ্বাস পরিবারের হয়ে মন্ডলদের পক্ষ নেওয়ায় ৩০ নভেম্বর সকালে তার বাড়ির রাস্তায় বেড়া দেওয়া হয়। প্রায় ৫০ বছর ধরে পরিবারের লোকজন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে আসছেন। তিনি ২১ বছর ধরে লিটনের বাড়ির পেছনে বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন। এই রাস্তা দিয়েই চলাচল করেন। কিন্তু ভোটের পর রাস্তাটি বেড়া দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। পরিবার পরিজন নিয়ে এখন কষ্ট করে অন্য পথ দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
অপরদিকে বাবুর আলী জানান, তিনি মন্ডল পরিবারের সদস্য হয়ে প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় বিশ্বাসদের পক্ষে ভোট করেন। এ কারণে ভোটের পরদিন তার ধানের গাড়ি রাস্তায় আটকে দেওয়া হয়। এরপর অন্যের বাড়িতে ধান ঝেড়ে ঘরে তুলেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লিটন বিশ্বাস জানান, কফিল যে জায়গা দিয়ে চলাচল করতেন সেটা তার জায়গা। এ কারণে তিনি বেড়া দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন। ভোটের কারণে রাস্তা বন্ধ করেননি বলে দাবি করেন তিনি।
ইউনুচ আলী মন্ডল বলেন, বাবুর আলীকে যে জায়গার ওপর দিয়ে গাড়ি নিতে বাধা দেওয়া হয়েছে সেটা তার নিজের জায়গা। এটা সরকারি কোনো রাস্তা নয়। বিষয়টি দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, বিষয়টি নিয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এফএ/এমএস