ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েই দায় সারলো পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়
ঝালকাঠির রাজাপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তড়িতাহত হয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন এক শ্রমিক। তিনি শনিবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার কেওতা গ্রামে গাছ কাটার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিচে পড়ে যান। এতে তার শরীরের একাধিক স্থান পুড়ে যায় ও জখম হয়।
সহকর্মী ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) পাঠানো হয়।
আহত তাকিব (২০) উপজেলার সাকরাইল গ্রামের আ. কাদেরের ছেলে।
জানা গেছে, ‘রাজাপুর ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ লাইন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজাপুর উপজেলায় (রাজাপুর উপকেন্দ্র -১ ও ২ (বড়ইয়া ইউনিয়ন ব্যতিত) বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।’ ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত নোটিশে শুক্রবার মাইকিং করে রাজাপুর উপজেলা জুড়ে এমন তথ্য জানানো হয়।
সেইসঙ্গে অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও এ তথ্য পোস্ট করা হয়। কিন্তু শনিবার সকাল ১০টার দিকে কোনো ধরনের মাইকিং ও প্রচার-প্রচারণা না করেই শুধুমাত্র রাজাপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দেওয়া হয় ‘০৫/০২/২২ ইং তারিখ রোজ শনিবার রাজাপুর ৩৩ কেভি লাইন রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য লাইন বন্ধ থাকার কথা ছিলো। কিন্তু হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় প্রোগ্রাম বাতিল করা হয়েছে।’
আর এতেই ঘটে এমন দুর্ঘটনা। গাছ ব্যবসায়ী ওয়াহিদুর রহমান জানান, শুক্রবারের মাইকিং অনুযায়ী উপজেলায় বিদ্যুৎ থাকবে না এমনটা শুনে বিদ্যুতের খুঁটি সংলগ্ন ঝুঁকিপূর্ণ গাছ কাটানোর সিদ্ধান্ত নিই। দুপুর ১টার দিকে ডাল কাটতে গাছে ওঠেন তাকিব। ডাল বিদ্যুতের তারের ওপর পড়তেই চিৎকার দিয়ে তাকিব নিচে পড়ে যান। কাঁচা ডালে আগুন জ্বলতে থাকে।
এতে তাকিবের শরীরের একাধিক স্থান পুড়ে যায় এবং বিভিন্ন স্থানে জখম হয়। প্রথমে রাজাপুর হাসপাতালে নিলে সেখান থেকে বরিশাল পাঠানো হয়েছে। এখন তিনি অসহ্য যন্ত্রণায় হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে রাজাপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মো. ওমর ফারুক জানান, আমাদের না জানিয়ে গাছ কেন কাটবে। বিদ্যুৎ থাকুক আর নাই থাকুক আমাদের জানিয়েই গাছ কাটতে হবে বলেই মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন তিনি।
আতিকুর রহমান/এফএ/এমএস
