দিনাজপুরে চিকিৎসকের ‘অবহেলায়’ প্রসূতি-নবজাতকের মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুর
প্রকাশিত: ০৬:১৩ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২
লাইফ কেয়ার ক্লিনিক

দিনাজপুরের খানসামায় লাইফ কেয়ার নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে সিজারের পর প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের দাবি সিজারের সময় চিকিৎসকের অবহেলা ও ক্লিনেক চিকিৎসক না থকায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। তবে প্রসূতি ও নবজাতকের চিকিৎসায় কোনো ধরনের গাফিলতি হয়নি বলে দাবি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের।

প্রসূতির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার বিকেলে উপজেলার টংগুয়া গ্রামের ধরপাড়ার আবু সায়েমের স্ত্রী মাজেদা বেগমের (৩৫) প্রসব বেদনা শুরু হলে পাকেরহাট লাইফ কেয়ার ক্লিনিকে নিয়ে যান স্বজনরা। পরে ওই ক্লিনিকের দায়িত্বরত নার্সরা নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করার পর রোগীর স্বজনদের আগ্রহে রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিজার হয়।

সিজার করেছিলেন দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সার্জন ডা. রবিউল ইসলাম। সিজার শেষ হওয়ার পর চিকিৎসক ওই ক্লিসিক ত্যাগ করে চলে যান। এরপর প্রসূতির রক্তক্ষরণ শুরু হলে চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে প্রসূতি ও নবজাতককে নার্স ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা দেন। তাদের অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হলে রাতেই প্রথমে প্রথমে নবজাতক ও পরে প্রসূতিকে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ভর্তির পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকালে প্রসূতির ও তার কিছুক্ষণ পর নবজাতকের মৃত্যু হয়।

প্রসূতির মাজেদার স্বামী আবু সায়েমের অভিযোগ, ‘চিকিৎসকের ভুলে সিজার করতে গিয়ে নাড়ি কেটে ফেলে। রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছিল না। কিন্তু সিজারের পর ক্লিনিকে কোনো চিকিৎসক ছিল না। আমার স্ত্রী ও সন্তানের অবস্থা সংকটাপন্ন হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুরে নেওয়া হয়। সেখানে ভর্তির পরপরই দুজনের মৃত্যু হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে অস্ত্রোপচার করা সার্জন ডা. রবিউল ইসলামকে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।

তবে প্রসূতি ও নবজাতকের চিকিৎসায় কোনো ধরনের গাফিলতি হয়নি বলে দাবি করে ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ নওশাদ জাগো নিউজকে বলেন, সিজারের পর প্রসূতি ও নবজাতকের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাদের দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রসূতি ও নবজাতক মারা যান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু কাম্য নয়। বিষয়টি জানার পর তা তদন্ত করা হচ্ছে। প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুতে চিকিৎসক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও অবহেলার প্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এমদাদুল হক মিলন/এসজে/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।