দেশসেরা কিশোরগঞ্জের সেই ‘এস ভি’ এখন ‘সরযূ বালা’
শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে বরাবরই জেলায় শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে কিশোরগঞ্জের এসভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদালয়। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক হয়েছেন দেশের সেরা প্রধান শিক্ষক।
তবে এখন থেকে ‘সরযূ বালা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’ নামে পরিচিত হবে বিদ্যালয়টি। সরকারি নির্দেশনায় ৫৩ বছর পর প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
‘সরযূ বালা’ স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা আইনজীবী ভৈরব চন্দ্র চৌধুরীর মেয়ের নাম। এরই মধ্যে বিদ্যালয়ের প্রধান গেটে সংযোজন করা হয়েছে পূর্ণ নামটি। বিদ্যালয়ের নথিপত্রেও নতুন নাম সংযুক্ত করা হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহনাজ কবীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯১৪ সালে আরবান প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। পরে মিডল ইংলিশ (সংক্ষেপে এম ই) স্কুল নামে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত সহপাঠ চালু হয়।
১৯৪৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর এটি উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। মোট ৫১ জন ছাত্রছাত্রী ও ১৯ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়ে বিদ্যালয়টি পথচলা শুরু করে। এর প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন জগৎ চন্দ্র চক্রবর্তী। আর প্রথম প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন আজিজুন্নেছা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ শহরের শোলাকিয়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন প্রথিতযশা আইনজীবী ভৈরব চন্দ্র চৌধুরী। বর্তমান শোলাকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই তাদের বাড়ি ছিল। আইনজীবী ভৈরব চন্দ্র চৌধুরীর মেয়ে সরযূ বালার নামে বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয়। ১৯৪৩ সালে বিদ্যালয়টির প্রথম নামকরণ করা হয় ‘সরযু বিদ্যা নিকেতন’।

১৯৬৮ সালের ১৫ নভেম্বর বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের সময় নামকরণ করা হয় এস ভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। ইংরেজি প্রথম অক্ষর ‘Saraju’ এর ‘S’ এবং ‘Vidya’ এর ‘V’ নিয়ে এস ভি করা হয়। সেই থেকে এস ভি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নামেই পরিচিত এটি।
১৯৮৫ সালে বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি চালু হয়। ২০১১ সাল থেকে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ডাবল শিফট চালু হয়। বর্তমানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি শ্রেণিতে তিনটি এবং নবম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত দুটি শাখা চালু আছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ১৫৪৪ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহনাজ কবীর জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ সই করা এক পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পত্রে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দাপ্তরিক ও অন্যান্য প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ নাম ব্যবহার না করে সংক্ষিপ্ত নাম ব্যবহার করছে, সেসব প্রতিষ্ঠানকে পূর্ণনাম ব্যবহার করার জন্য গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর পত্র দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি যথাযথ মনিটরিং করে চলতি বছরের ৩০ মার্চের মধ্যে নিশ্চিত করে অধিদপ্তরকে জানাতে পত্রে অনুরোধ করা হয়। এ নির্দেশনার পর বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বিদ্যালয়টি জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৯ এ জাতীয় পর্যায়ে (মাধ্যমিক বিদ্যালয় শাখায়) শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান নির্বাচিত হন বর্তমান প্রধান শিক্ষিকা শাহনাজ কবীর।
নূর মোহাম্মদ/এসআর/জেআইএম