অবৈধভাবে শিকারে ধ্বংস হচ্ছে দেশি মাছ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ০৫:৪৬ পিএম, ২৮ এপ্রিল ২০২২
জলাশয়ে বাঁশের বেড়া দিয়ে শিকার করা হচ্ছে মাছ। ছবি-জাগো নিউজ

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাঘাটা ও পলক নদীতে বাঁশের বেড়া, নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল এবং বাঁশের ঘের ফেলে মাছ ধরছে একটি চক্র। প্রজননের শুরুতেই মাছের রেণু ও মা-মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ নিধন করা হচ্ছে। এতে ধ্বংস হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছের বংশ। বিভিন্ন স্পটে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ ধরার ফাঁদ পাতানোর কারণে পানির প্রবাহও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই শুরু হয় মাছের রেণু ও মা-মাছ নিধনের অবৈধ কার্যক্রম। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে লোকদেখানো অভিযান পরিচালনা করে। এতে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে মৎস্য নিধনকারী চক্রগুলো।

স্থানীয়রা জানান, বোরো চাষের জন্য প্রায় তিন মাস মনু ব্যারেজ বন্ধ করে লাঘাটা নদীর পানি আটকানো ছিল। দীর্ঘ সময় নদীতে পানি থাকায় মাছসহ জলজ প্রাণীর সংখ্যা বাড়ে। এক সপ্তাহ আগে মনু ব্যারেজ খুলে দেওয়ায় নদীর পানি কমে যায়। এ সুযোগে স্থানীয় মৎস্য নিধনকারী বিভিন্ন চক্র লাঘাটা নদীতে অবৈধভাবে বাঁশের বেড়া ও নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে দিনরাত মৎস্য নিধন করে যাচ্ছে। ফলে দেশি মাছের প্রজনন, পানি প্রবাহ ও নদীর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

লাগাতার নিধনের ফলে প্রতি বছর মারা যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির ছোট-বড় মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী। এতে নদী ও জলাশয়ে প্রাকৃতিক মাছের উপস্থিতি কমে যাচ্ছে।

jagonews24

সরেজমিন গিয়ে গিয়ে দেখা যায়, লাঘাটা নদীর নিম্নাঞ্চল এলাকায় নদীতে বাঁশের বেড়া স্থাপন করে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে মৎস্য নিধন চলছে। লাঘাটা নদীর কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়ন ও রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়ন এলাকায় কয়েকটি বাঁশের বেড়া এবং পলক নদীর একাধিক স্থানে বাঁশের বেড়া ও মাছ ধরার ফাঁদ বসানো হয়েছে।

কামারচাক এলাকার বাসিন্দা শামসুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, রাজনগর উপজেলা ও কমলগঞ্জ উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়েছে পলক ও লাঘাটা নদী। প্রজনন মৌসুমে এ দুই নদীতেই দেশীয় প্রজাতির প্রচুর মাছের প্রজনন হয়। দেশীয় প্রজাতির মাছ ঠিকিয়ে রাখার জন্য পানির স্রোতধারা স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনিক উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার এলাকার ফেরদৌস আহমেদ ও আব্দুর রহমান বলেন, কয়েক বছর আগেও পলক নদী, লাঘাটা নদী ও কেওলার হাওরে প্রচুর দেশীয় মাছ পাওয়া যেতো। এখন এসব মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। নদী সেচ, বাঁশের বেড়া ও নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল স্থাপনের ফলে দেশি মাছ কমে যাচ্ছে। অবৈধভাবে মাছ শিকার বন্ধ হলে এলাকায় দেশীয় মাছের অভাব দূর হতো।

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শহিদুর রহমান সিদ্দিকী জাগো নিউজকে বলেন, কয়েকদিন আগে লাঘাটা নদীতে অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে আবারও অবৈধ বেড়া ও নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

আব্দুল আজিজ/এসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।