দিবস আসে চলেও যায়, ভাগ্য বদলায় না চা শ্রমিকদের

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মৌলভীবাজার
প্রকাশিত: ১২:৩৫ পিএম, ০১ মে ২০২২

অধিকারবঞ্চিত চা শ্রমিকদের রয়েছে করুণ ইতিহাস। দেশে প্রায় দু’শ বছর ধরে বসবাসরত চা শ্রমিকরা শ্রমে ঘামে প্রায় বছর চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেলেও তাদেরকে ছাড়ে না বঞ্চনা আর অভাব। সময়ের গতিধারায় দ্রব্যমূল্য পাল্লা দিয়ে বাড়লেও তাদের মজুরি সেভাবে বাড়ে না। প্রতিদিন ১২০ টাকা মজুরি নিয়ে জীবন কাটাতে হয় চা শ্রমিকদের।

চা শ্রমিকদের অভিযোগ, মে দিবস এলেই আমরা দাবি আদায়ের জন্য সভা সমাবেশ করি। নতুন চুক্তি হয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। কিন্তু চুক্তি মোতাবেক দাবি আর পূরণ হয় না। দাবি আদায়ের জন্য আন্দেলন সংগ্রাম করতে হয়।

মালিকপক্ষ বলছে, শ্রমিকদের মৌলিক চাহিদা পূরণে তারা আন্তরিক। কিন্তু বিশ্ববাজারে চায়ের দাম কমে যাওয়ায় বাগান পরিচালনা করা কঠিন হচ্ছে।

চা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ও রপ্তানি পণ্য। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে চায়ের অভ্যন্তরীণ চাহিদার পরিমাণও দ্রুত বেড়ে চলেছে। এই চা উৎপাদনে নিরলসভাবে কাজ যাচ্ছে দেশের ১৬৭টি বাগানের প্রায় তিন লাখ চা শ্রমিক। এর মধ্যে মৌলভীবাজার জেলার ৯২টি চা বাগানে কর্মরত লক্ষাধিক চা শ্রমিক বছরের পর বছর ধরে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এখনও তাদেরকে বেতন বৈষম্যসহ নানা বঞ্চনার শিকার হতে হচ্ছে।

দিবস আসে চলেও যায়, ভাগ্য বদলায় না চা শ্রমিকদের

প্রতি বছর মে দিবস আসে আবার চলে যায়। কিন্তু তাদের নিজস্ব ভূমি থেকে শুরু করে শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ মৌলিক অধিকার বাস্তবায়িত হয়নি আজো। একরকম দাসের মতো জীবন যাপনে শুধু আক্ষেপই ঝরে তাদের কণ্ঠে।

চা শ্রমিকদের সংগঠন প্রতিবছর মে দিবসে শ্রমিক সমাবেশ করে তাদের দাবি দাওয়া তুলে ধরলেও সেটিও বাস্তবায়ন না হওয়ায় তারা আরো বেশি বিপাকে পড়েছেন। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হলেও অনেক বাগান সম কাজ সম মজুরি দিচ্ছে না বলে জানান শ্রমিক নেতারা।

আলাপকালে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজড়া জাগো নিউজকে বলেন, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হলেও অনেক বাগান সম কাজ সম মজুরি দিচ্ছে না। চুক্তি হওয়ার পরও দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করতে হয়।

দিবস আসে চলেও যায়, ভাগ্য বদলায় না চা শ্রমিকদের

কথা হয় বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা রাম ভজন কৈরির সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, মে দিবস শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দিবস, সেটা চা শ্রমিকরা এখনো বুঝতে পারেনি বলেই তারা অধিকারবঞ্চিত।

বাগান ব্যবস্থাপক চা প্লানটার ইবাদুল ইসলাম ও মৌলভীবাজারের রাজনগর চা বাগানের মালিক বিশিষ্ট শিল্পপতি রাগিব আলী জাগো নিউজকে বলেন, বিশ্ববাজারে চায়ের দরপতনের কারণে বাগান পরিচালনায় আমরা হিমশিম খাচ্ছি। বাজারে নিম্নমানের চা পাতার প্রবেশ বন্ধ করতে হবে। শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে হলে চায়ের দাম বৃদ্ধি হতে হবে। তা না হলে আগামীতে বাগান চালানো কঠিন হবে।

আব্দুল আজিজ/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।