লিফটে আটকা পড়ে জরুরি নম্বরে কল, ‘ডিউটিতে নেই’ জানালেন কর্মচারী

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঝিনাইদহ
প্রকাশিত: ০২:২৩ এএম, ১৬ মে ২০২২
হাসপাতালের লিফটে আটকে পড়েন নারী-শিশুসহ ১১ জন। ছবি: সংগৃহীত

হাসপাতালের লিফটে নারী-শিশুসহ আটকা পড়েন ১১ জন। সেখানে ছিলেন সাংস্কৃতিককর্মী ইকরামুল হক লিকুও। দ্রুত লিফটে থাকা জরুরি নম্বরে কল করেন তিনি। কিন্তু জরুরি নম্বরের কল যে কর্মচারী রিসিভ করেন, তিনি সাফ জানিয়ে দেন- ‘আমি ডিউটিতে নেই। কিছুই করতে পারবো না।’

রোববার (১৫ মে) মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে এমন ঘটনা ঘটে। ফলে আধা ঘণ্টারও বেশি সময় লিফটে আটকে ছিলেন ওই ১১ জন। এসময় নারী ও শিশুরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে চিৎকার শুরু করেন। পরে লিফটে আটকেপড়া এক যুবক ৯৯৯-এ কল করে সহায়তা চাইলে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। তবে এ ঘটনায় কেউ অসুস্থ বা আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

সাংস্কৃতিককর্মী ইকরামুল হক লিকু জাগো নিউজকে বলেন, ‘সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রোগী দেখতে গিয়েছিলাম। লিফটে ওঠার পরপরই ঝাঁকি খেয়ে লিফট আটকে যায়। ভেতরে লেখা এমারজেন্সি নম্বর দেখে কল দেই। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় ফোনটা রিসিভ করে অন্যপ্রান্ত থেকে জানানো হলো- আমি ডিউটিতে নেই। আমি কিছুই করতে পারবো না।’

jagonews24

তিনি বলেন, ‘ভয়ে নারী-শিশুসহ প্রায় সবাই কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। ওই সময় হঠাৎ একটি ছেলে জরুরি জাতীয় সেবা ৯৯৯-এ কল করে সাহায্য চান। প্রায় আধা ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিস এসে আমাদের সবাইকে বের করে। নারী-শিশুসহ ১১ জন ছিলাম আমরা।’

এদিকে, লিফটে আটকেপড়াদের একজন তার ফেসবুকে ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, লিফটে আটকেপড়া নারী-শিশুরা ভয়ে চিৎকার করছেন, সাহায্য চাইছেন। কাউকে কাউকে বলতে শোনা যায়, ‘ও আল্লাহ বাঁচাও, বাঁচাও..’।

তবে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পাঁচজনকে উদ্ধারের তথ্য জানানো হয়েছে। ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সুমন আলী বলেন, ‘৯৯৯-এ কল পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে লিফটে আটকেপড়াদের উদ্ধার করা হয়। আমরা পাঁচজনকে উদ্ধার করেছি। তার আগে কাউকে সেখান থেকে বের করা হয়েছে কি না, তা জানা নেই।’

জানতে চাইলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সৈয়দ রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘সন্ধ্যায় লিফট দুর্ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় সবাইকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সময় হাসপাতালের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল। মাঝে-মধ্যেই হাসপাতালে লিফটে সমস্যা হয়। মাসিক মিটিংয়ে লিফটের বিষয়টি জানানোও হয়েছে। আশা করি, দ্রুত সমাধান হবে।’

জরুরি নম্বরে কল করেও না পাওয়ার অভিযোগ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এমারজেন্সি নম্বরে কল করার পর যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা দুঃখজনক। সেই কর্মচারীকে আমি ডেকেছিলাম এবং তাকে বলেছি কাজটি তুমি ঠিক করোনি। ভবিষ্যতে যেন এমন কাজ আর না করা হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।’

আব্দুল্লাহ আল মাসুদ/এএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।