প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে গৃহবধূকে হত্যার দায় স্বীকার স্বামী-সন্তানের
জয়পুরহাটের কালাইয়ে প্রতিবেশীকে ফাঁসাতে স্বামী-সন্তান মিলে গৃহবধূ শিপন আক্তারকে গলা কেটে হত্যা করেছে। রোববার (২৯ মে) রাতে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুর রহমানের আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন তারা।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন, হত্যার ঘটনায় গৃহবধূর ভাই শাহজাহান আলী মামলা করেছেন।
গ্রেফতাররা হলেন- কালাই উপজেলার দুধাইল-নয়াপারা গ্রামের মৃত আলেক উদ্দিন সরকারের ছেলে তোজাম হোসেন সরকার (৫২) এবং তার ছেলে শিহাব উদ্দিন (২০)।
এর আগে শনিবার সকালে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পূর্ব শত্রুতার জেরে ওই গৃহবধূকে দুর্বৃত্তরা জবাই করে হত্যা করেছে বলে প্রথমে বাবা-ছেলে অভিযোগ তোলেন। তাদের এমন কথায় হত্যাকাণ্ডের ক্লু খুঁজতে মাঠে নামেন সিআইডি ও ডিবিসহ পুলিশের একাধিক টিম।
গৃহবধূর স্বজন, প্রতিবেশী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবেশী আয়নাল হকের ছেলে আহসানের কাছ থেকে ১০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন তোজাম হোসেন সরকার। এ পর্যন্ত ওই জমির দলিল হয়নি। জমির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্রেতা সেই জমি দলিল করে দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে বেশকিছু দিন ধরে ঝগড়া-বিবাদ লেগে রয়েছে। জমি উদ্ধার ও প্রতিবেশীসহ আরও বেশ কয়েকজনকে শিক্ষা দিতে গৃহবধূকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তার স্বামী ও সন্তান। শুক্রবার রাতে খাবারের পর ঘরের দরজা খোলা রেখে গৃহবধূ শিপন আক্তার তার আট বছরের ছেলে তুহিনকে নিয়ে শুয়ে পড়েন। রাতের কোনো এক সময়ে বাবা ও ছেলে মিলে গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা করে। পরে তারা পুলিশে খবর দিলে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠান।
নিহতের ভাই ও মামলার বাদী শাহজাহান আলী বলেন, প্রথম থেকেই পুরো পরিবারের সন্দেহ ছিল তাদের ওপর। বাবা যেমন চতুর তেমনি চতুর ছিল ছেলেটিও। জমি নিয়ে প্রতিবেশীদের ফাঁসাতেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা।
এ বিষয়ে কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈনুদ্দীন জানান, বাবা-ছেলে মিলে গৃহবধূকে হত্যা করেছে বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে। রোববার বিকেলে তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করা হয়েছে।
রাশেদুজ্জামান/আরএইচ/জিকেএস