ঘুস লেনদেনের অডিও ফাঁস, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসিকে বদলি
আসামির স্বজনের সঙ্গে ঘুস লেনদেনের অডিও ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌহিদুজ্জামানকে বরিশাল বিভাগে বদলি করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে তাকে বদলি করা হলেও মঙ্গলবার (৩১ মে) বিকালে স্থানীয় গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ওসি মো. তৌহিদুজ্জামানকে বরিশাল রেঞ্জে বদলি করা হয়। তবে ঘুস লেনদেনের ফোনালাপের অডিও ফাঁসের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে কিনা সে বিষয়ে পুলিশ সুপার কোনো মন্তব্য করেননি।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্তে যা পাওয়া গেছে, সেগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তারা দেখবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের ১০ এপ্রিল গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদ রানার বাসা থেকে জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মাসুদসহ তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। অন্য দুই আসামি হলেন- রুমেল হক ও খলিলুর রহমান বাবু। এর মধ্যে মাসুদ রানা গ্রেফতার হয়ে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে আছেন।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন গাইবান্ধা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌহিদুজ্জামান। ঘটনার নয় মাস পর চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি মাসুদ ও খলিলুর রহমান বাবুসহ দুজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তিনি।
১৮ জানুয়ারি সুন্দরগঞ্জের ওসি হিসেবে বদলি হন। গাইবান্ধা কোর্ট পুলিশ ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে অভিযোগপত্রটি সংশোধনের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামানের কাছে ফেরত পাঠায়। ৭ মার্চ রুমেল হকসহ তিন আসামিকেই অভিযুক্ত করে আদালতে সংশোধিত অভিযোগপত্র জমা দেন তিনি।
সম্প্রতি অভিযোগপত্রে থাকা এক আসামির স্বজনের সঙ্গে তার ঘুস লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁস হয়। পাঁচ দফায় প্রায় ১৭ মিনিটের ফোনালাপ হয়। এতে মামলার অভিযোগপত্র থেকে এক আসামির নাম বাদ দেওয়া ও আইনের ধারা কমিয়ে দিতে টাকা লেনদেনের কথাবার্তা হয়। কিন্তু কথামতো কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত চান ওই আসামির স্বজন।
এদিকে, ফোনালাপটি দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে গত ১৪ মার্চ থেকে গাইবান্ধার বিভিন্ন মহলে আলোচনা সমালোচনার ঝড় ওঠে। ওই দিন রাতে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি ও তৎকালীন গাইবান্ধা ডিবি পুলিশের ওসি তৌহিদুজ্জামানকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করে গাইবান্ধা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। পরদিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) মো. আবদুল আউয়ালকে আহ্বায়ক করে এক সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
যদিও ঘুস লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার করেন ওসি তৌহিদুজ্জামান। তিনি বলেন, অভিযোগটি সঠিক নয়। এটা অসম্ভব। এটা চাঞ্চল্যকর মামলা, টাকা নেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, টাকা লেনদেন নিয়ে আমার কারও সঙ্গে কোনো কথাবার্তা হয়নি। এছাড়া আমি কোনো আসামির নাম বাদ দেইনি।
জাহিদ খন্দকার/আরএডি