চাঁপাইনবাবগঞ্জে কম বৃষ্টিতে আমের ফলন বিপর্যয়, হতাশ চাষিরা
সঠিক সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় এবার পর্যাপ্ত আকারে বড় হয়নি চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম। এতে ফলন কম হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন চাষিরা। কৃষি বিভাগ বলছে- আমের গুটি থাকা অবস্থায় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবার আকার ছোট হয়েছে।
রোববার (৫ জুন) জেলার কয়েকটি আম বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গত বছরের তুলনায় এবার আমের আকার বেশ ছোট। কানসাটের ঐতিহ্যবাহী আম বাজারে গিয়েও দেখা মেলে একই চিত্রর।

শিবগঞ্জ উপজেলার আম চাষি এনামুল হক বলেন, আমার এবছর প্রায় পাঁচবিঘা বাগানে বিভিন্ন জাতের আম রয়েছে। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে আমগুলো তেমন বড় হয়নি। তাই আমের সংখ্যা অনেক হলেও ভালো ফলন হয়নি।
তিনি আরও বলেন, আজকে একটি গাছের গোপালভোগ আম পেড়ে ২ হাজার ৪০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করলাম। এ গাছে অন্যবছর আম হয় প্রায় ২০ মণ। আর এবার হলো মাত্র ৯ মণ। আমার সব বাগানেই এবার আম ছোট। তবে গত বছরের তুলনায় এবার দাম অনেক বেশি।
পুকুরিয়া এলাকার সুজা মিঞা বলেন, আমার বাগানে প্রায় সব জাতের আমই আছে। কিন্তু এবার আমের আকার ছোট। ঠিক সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় হয়তো এমনটা হয়েছে। আর আজকে গোলাভোগ আম বিক্রি করলাম ২ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে। গতবছরের তুলনায় এবার আমের বাজার ভালো কিন্তু আম যদি না থাকে বিক্রি করবো কী?

ছত্রাজিতপুর গ্রামের কামাল উদ্দিন বলেন, মার্চ মাসের দিকে বেশ কিছুদিন বৃষ্টি হয়নি। এ অনাবৃষ্টির কারণে আম বড় হতে পারেনি। তবে দাম যেহেতু ভালো আছে, আশা করছি লাভবান হবো। এবছর আমার বাগানে ক্ষিরসাপাত, লক্ষণভোগ, ফজলি ও গোপালভোগসহ বিভিন্ন জাতের আম আছে।
শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের আনারুল ইসলাম বলেন, শনিবার খিরসাপাত আম বিক্রি করেছি ৩ হাজার ৪০০ টাকা মণ দরে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার আম কম ছিল, মাত্র ১০ মণ আম হয়েছে। যে বাগানে গতবছর আম হয়েছিল প্রায় ৪০ মণ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শষ্য) রাজিবুর রহমান বলেন, মার্চ মাসের দিকে আমের গুটির জন্য বৃষ্টি প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেসময় বৃষ্টি হয়নি। ফলে আম বেড়ে ওঠেনি। এছাড়া শিলাবৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমের ফলন কম হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গতবছর জেলায় আমের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। চলতিবছর ৩ লাখ ১৫ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোহান মাহমুদ/এমআরআর/জিকেএস