রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে অবস্থান নেওয়া ছাত্রদের কালোবাজারিদের হুমকি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি জামালপুর
প্রকাশিত: ০৩:৪৭ পিএম, ১৯ জুলাই ২০২২

বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে দ্বিতীয় দিনের মতো জামালপুর রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চারজন শিক্ষার্থী।

তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কর্মসূচি বন্ধ করতে টিকিট কালোবাজারিদের পক্ষ থেকে তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান জানান, বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে সোমবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকেই জামালপুর রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। বিষয়টি যাত্রী সাধারণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। যাত্রীরা এ যৌক্তিক দাবিতে সম্মতি জানান। কিন্তু মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) সকালে এখানে অবস্থান নেওয়ায় কালোবাজারিরা তাদের হুমকি দেন। কয়েকজন এসে তাদের এখান থেকে চলে যেতে বলেন। এরপর থেকে তারা আতংকে রয়েছেন। তবে রনির ছয় দফা দাবি পূরণ হলেই কেবল ঘরে ফেরার কথা জানিয়েছেন তারা।

এরআগে, সোমবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকে জামালপুর টাউন রেলওয়ে জংশন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৫টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে চলে যান।

স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন খিলগাঁও মডেল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ ভূইয়া হৃদয় (২৫), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান ও পুলিশ তত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রুবেল (২৩), একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রুকনুজ্জামান সীমান্ত (২৪) ও সরকারি ইসলামপুর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় বোস (২২)।

জামালপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলজার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ছাত্ররা সকালে বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

রনির ৬ দফা দাবিগুলো হলো

টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সহজ ডটকম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করা ও হয়রানির ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া। যথোপযুক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ। অনলাইনে কোটায় টিকিট ব্লক করা বা বুক করা বন্ধ করা ও অনলাইন-অফলাইনে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সবার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা। যাত্রীচাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া। ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক-তত্ত্বাবধায়কসহ অন্য দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক নজরদারি ও শক্তিশালী তথ্য সরবরাহব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেলসেবার মান বাড়ানো। ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

গত ১৩ জুন রেলের টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন রনি। এরপর ঈদুল আজহার আগে ৭ জুলাই থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অনশন শুরু করেন তিনি। ১০ জুলাই ঈদের দিনেও তিনি সেখানে অবস্থান নিয়েছিলেন।

নাসিম উদ্দিন/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।