ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জাল পোড়ানোর সময় দগ্ধ ৩
শেরপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অবৈধ মাছ ধরার চায়না ও কারেন্ট জাল জব্দ করে পোড়ানোর সময় তিনজন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) বিকেলে সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের ইলশাঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- স্থানীয় মো. ইনসার আলীর ছেলে মো. ইয়াকুব আলী (৪০), মৃত ধুইলতা মিয়ার ছেলে মো. ছাউত মিয়া ও মো. শিয়ালু মিয়ার ছেলে মো. জবেদ আলী। তারা তিনজনই বর্তমানে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন।
স্থানীয় ও আহতদের স্বজনরা জানান, জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে জেলা মৎস্য অফিসের উদ্যোগে মঙ্গলবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উজ্জল হোসেন, জেলা মৎস্য অফিসের সহকারী পরিচালক সুলতানা লায়লা তাসনীম ও সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মমতাজুন্নেছাসহ সংশ্লিষ্টরা শেরপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে চায়নাদুয়ারীসহ ১০টি অবৈধ জাল জব্দ করেন।
পরে সেগুলো ভাতশালা ইউনিয়নের ইলশাঘাট এলাকায় জড়ো করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতিতে পুড়িয়ে ফেলার উদ্যোগ নেন। এ সময় স্থানীয় ইয়াকুব আলী, ছাউত মিয়া ও জবেদ আলী সেগুলো পুড়ানোর জন্য সহযোগিতা করতে পেট্রল ও ডিজেল ঢালেন। তবে তারা নিরাপদ দূরত্বে সরে যাওয়ার আগেই কেউ একজন জালে আগুন ধরিয়ে দিলে তিনজনই দগ্ধ হন। তাদের পার্শ্ববর্তী নদীর পানিতে চুবিয়ে আগুন নিভিয়ে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা।
এদিকে এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা ভ্রাম্যমাণ আদালতের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তাদের প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, ভাতশালা ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুন নাহার ও লছমনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাইসহ অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

তবে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উজ্জল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী জালগুলো জড়ো করে ব্যানার টানিয়ে ছবি ও ভিডিও করার প্রস্তুতি চলছিল। এ সময় আদালতের নির্দেশ ছাড়াই সেখানে পেট্রল ঢেলে স্থানীয় একজন আগুন জ্বালিয়ে দিলে তিনজন সামান্য দগ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং তাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা করানোরও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে মৎস্য অফিস বা ভ্রাম্যমাণ আদালতের কেউ আগুন দেয়নি।’
জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. অমিয় জ্যোতি সাইফুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আহতদের মধ্যে দুজনের শরীরের প্রায় ১৫-১৮ শতাংশ পুড়ে গেছে আর অপরজনের ৫-৭ ভাগ পুড়েছে। তবে তাদের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’
এ বিষয়ে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘খবর পেয়ে সদর থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরুদ্ধ কর্মকর্তাদের উদ্ধার করেছে। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’
ইমরান হাসান রাব্বী/এসজে/জেআইএম