দেওয়াল যেন কবিতার বই

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ০৯:৪৩ এএম, ২৭ আগস্ট ২০২২

শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে গেলেই চোখে পড়বে নান্দনিক এক দেওয়াল। দেওয়াল মানুষকে কোনো কিছু থেকে বিরত রাখার প্রতীক হলেও এ দেওয়ালটি মানুষকে কাছে টানে অন্য মায়ায়। কবিতার মায়ায়। দেশে এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম। উদ্যোগটি গ্রহণ করেছেন শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনদীপ ঘরাই।

একমাসে তৈরি দেওয়ালটি বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) রাতে সাজানো হয় বাংলার খ্যাতিমান ও নবীন কবিদের ১৩৬টি কবিতায়। শুক্রবার সকাল থেকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। শিশু, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতি ও বৃদ্ধদের মনোযোগ দিয়ে পড়তে দেখা যায় কবিতাগুলো।

poem3

১৫ ফুট চওড়া আর ১২ ফুট উচ্চতার এ কংক্রিটের দেওয়ালটি তৈরি হয়েছে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও মনদীপ ঘরাইয়ের সম্মিলিত অর্থায়নে। দেওয়ালের ওপর সাদা টাইলসে খোদাই করে লেখা হয়েছে কবিতাগুলো।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, সুকান্ত, শামসুর রহমান, হেলাল হাফিজ, আহমদ ছফা, নির্মলেন্দু গুণ প্রমুখ বরেণ্য কবি থেকে শুরু করে এ প্রজন্মের জনপ্রিয় কবি টোকন ঠাকুর, আখতারুজ্জামান আজাদ, সাদাত হোসাইন, মারজুক রাসেল, রোমেন রায়হান প্রমুখদের কবিতা স্থান পেয়েছে দেওয়ালে।

শরীয়তপুর জেলার মাটিতে যেহেতু গড়ে উঠেছে কাব্যমায়া, তাই এ মাটির কবিদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। অতুল প্রসাদ সেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা কবি মফিজুল ইসলাম (কবি ভাই), শ্যামসুন্দর দেবনাথসহ শরীয়তপুরের ১৩ জন কবির কবিতা গাঁথা আছে এ দেওয়ালে।

poem3

দেওয়ালটির উদ্যোক্তা ইউএনও কবি মনদীপ ঘরাই বলেন, কবিতা শুধুই বইয়ের মলাটে কিংবা খাতার পাতায় আটকে থাকার প্রথা ভাঙতে এই উদ্যোগ। প্রযুক্তির বেড়াজালে আবদ্ধ মানুষকে বই পড়াতে আকৃষ্ট করতে কাব্যমায়া বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারবে। কবিতার প্রতি, মননশীল কাজের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ানোর দায়বদ্ধতা থেকেই উদ্যোগটির স্বপ্ন দেখেছিলাম। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমার স্বপ্নটি প্রাণ পেয়েছে। এটা অনেক বেশি প্রশান্তির।

এই দেওয়ালের জন্য কবিতা লিখেছেন শরীয়তপুরের তরুণ লেখক আবিদ হাসান অরণ্য। তিনি বলেন, আমার মতো ক্ষুদ্র লেখকের লেখা দেওয়ালটিতে স্থান পাওয়ায় আমি আপ্লুত। দেশে এমন দেওয়াল এটাই প্রথম।

এর আগে যশোরের অভয়নগরে ভূমি অফিসে দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক থিমপার্ক স্বাধীনতা অঙ্গণ নির্মাণ করেছিলেন মনদীপ ঘরাই। গত বছর তার হাত দিয়েই তার বাংলোর দেওয়ালে গড়ে তোলেন দেশের প্রথম উন্মুক্ত দেওয়াল পাঠাগার ‘একুশ’।

ছগির হোসেন/এফএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।