মেহেরপুরে প্রধান শিক্ষকের পিটুনিতে সহকারী শিক্ষক আহত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর
প্রকাশিত: ০৬:০৮ পিএম, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
মারধরের শিকার শিক্ষক মিরাজ শরীফ

মেহেরপুরে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৭ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে গাংনী উপজেলার রাধাগোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জানা গেছে, গত ২৫ আগস্ট বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির গণিত ক্লাসে যান প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান। ক্লাসে অংক না পারায় তিন শিক্ষার্থীকে ডাস্টার দিয়ে মাথায় আঘাত করে আহত করেন তিনি। এ ঘটনায় ওই তিন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে আসেন। প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে সহকারী শিক্ষকদের কাছে বিষয়টি জানতে চান তারা। সহকারী শিক্ষকরা অভিভাবকদের সান্ত্বনা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।

বুধবার সকালে সহকারী শিক্ষক মিরাজ শরীফ শিক্ষার্থীদের মারধরের বিষয়টির প্রতিবাদ করেন ও অভিভাবকদের আসার বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জানান। এতে রাগান্বিত হয়ে প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান তার আত্মীয়-স্বজনদের খবর দিয়ে বিদ্যালয়ে ডেকে এনে মিরাজকে পিটিয়ে আহত করেন। পরে অন্য শিক্ষক ও স্থানীয়রা মিরাজ শরিফকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান।

আহত শিক্ষক মিরাজ শরিফ বলেন, প্রধান শিক্ষক ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখান ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। যার ফলে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। অনেক কষ্ট করে হোম ভিজিটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়ে আসা হয়। এ বিষয়টি নিয়ে মাঝেমধ্যে প্রধান শিক্ষক আমাদের ওপর রাগান্বিত হন এবং মারমুখী আচরণ করেন।

আগের ঘটনার রেশ ধরেই আজ তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

বিদ্যালয়ের আরেক সহকারী শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাদের অভিভাবক। তিনি যা করবেন তার মধ্যে আমাদের সম্মান অক্ষুণ্ণ রেখে এবং শালীনতা বজায় রেখে করা উচিত। মিরাজ শরিফকে পিটিয়ে আহত করার সত্যতা স্বীকার করে এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, আমি শিক্ষক হলেও রক্ত-মাংসে গড়া মানুষ। আমাকে সব শিক্ষকরা মিলে বিভিন্ন সময় হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে। আমি বিদ্যালয় থেকে বদলি নিতে চেয়ে শিক্ষা অফিসে দরখাস্ত করেছি। আজকে আমার ধৈর্যের বাধ ভেঙে গেলে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।

তবে শিক্ষার্থীদের মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি কোনো শিক্ষার্থীদের মারধর করিনি। আমার বিরুদ্ধে কোনো শিক্ষার্থীর অভিযোগ নেই। অভিভাবকরা যদি আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করতে পারেন তবে আমি স্বেচ্ছায় বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যাবো।

গাংনী উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাজাহান রেজা বলেন, শিক্ষক মিরাজ শরিফের অভিযোগের ভিত্তিতে দুই সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে তা পাঠানো হবে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনিই ব্যবস্থা নেবেন।

আসিফ ইকবাল/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।