চাকরি স্বামীর, কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধ দেন স্ত্রী!

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত: ০৮:৪৮ পিএম, ০২ অক্টোবর ২০২২

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আমজানোখার ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বামীর পরিবর্তে স্ত্রী দায়িত্ব পালনের অভিযোগ উঠেছে। ক্লিনিকে আসা রোগীদের ওষুধ দিচ্ছেন তিনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রত্নাই কমিউনিটি ক্লিনিকে হেলথ কেয়ার প্রোভাইডরের (সিএইচসিপি) দায়িত্বে আছেন আব্দুস সালাম। প্রায়ই তিনি তার স্ত্রী শামীমা সুবর্নাকে ক্লিনিকে বসিয়ে চলে যান বাইরে। আর বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের ওষুধ দেন তার স্ত্রী।

রোববার (২ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। সিএইচসিপি আব্দুস সালামের স্ত্রী শামীমা সুবর্না রোগীদের ওষুধ দিচ্ছেন।

ক্লিনিকে ওষুধ দেওয়ার রেজিস্ট্রার খাতায় লক্ষ্য করা গেছে, আগে থেকেই স্থানীয় কয়েকজনের নাম লেখা রয়েছে। তবে তাদের কী ওষুধ দেওয়া হয়েছে, কোন সময় দেওয়া হয়েছে এমনকি ওষুধ কতজন নিয়েছেন তার ঘরগুলো ফাঁকা রয়েছে। এ বিষয়ে তবে শামীমা সুবর্না জানান, এসব ঘর তার স্বামী এসে পূরণ করবেন।

তিনি বলেন, আজকেই শুধু আমার স্বামী জরুরি কাজে বালিয়াডাঙ্গী গেছেন। তাই আমাকে ওষুধ দিতে বলেছেন। তার শিখিয়ে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী আমি ওষুধ দিচ্ছি। কোনো অসুবিধা হবে না।

ওষুধ কিংবা চিকিৎসা সম্পর্কে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ডিগ্রি আছে কি-না জানতে চাইলে শামীমা সুবর্না বলেন, আমি ডিগ্রি পাস করেছি। ওষুধ ও রোগ সম্পর্কে ভালো ধারণা আছে।

জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে রত্নাই কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আব্দুস সালাম অকপটে বিষয়টি স্বীকার করে নেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ব্যক্তিগত কাজে একটু বাইরে এসেছিলাম। তাই স্ত্রীকে বসিয়ে দিয়েছিলাম ক্লিনিকে।

আব্দুস সালাম আরও বলেন, এখানে সরকারি চাকরি না, এটাতে তেমন কোনো সমস্যা হবে না। আর আমরাতো প্রকল্পের অধীনে, নিউজ করে তেমন কিছু হবে না।

এদিকে ক্লিনিকের দায়িত্বে থাকা অন্য দুজন স্টাফ স্বাস্থ্য সহকারী তফিজুল ইসলাম ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সহকারী (এফডাব্লিউএ) আক্তারা খাতুনকে পাওয়া যায়নি। যদিও দুজনের সঙ্গে পরে যোগাযোগ করা হলে জানান, একজন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে এবং অন্যজনে ব্যক্তিগত ছুটিতে আছেন।

এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমাস জাগো নিউজকে বলেন, সঠিক রোগ নির্ধারণ না করে ওষুধ প্রয়োগের ফলে কঠিন সমস্যা তৈরি হতে পারে। এতে মৃত্যু ঝুঁকিও রয়েছে। এছাড়া কর্মস্থলে স্বামীর পরিবর্তে স্ত্রীর দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।

দায়িত্বে থাকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য পরিদর্শক (ইনচার্জ) জহিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনার নির্দেশনায় ওই ক্লিনিকের সিএইচসিপিকে লিখিতভাবে কারণ দর্শাতে বলা হবে। এর জবাব গ্রহণযোগ্য না হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তানভীর হাসান তানু/এসজে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।