নওগাঁয় ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচে হাজারো মানুষের ঢল
![নওগাঁয় ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচে হাজারো মানুষের ঢল](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2019November/boat-race-1-20221007093845.jpg)
নওগাঁর ঐতিহ্যবাহী গুটার বিলে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে সদর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের সরাইল গ্রামবাসী এর আয়োজন করে।
নৌকাবাইচ দেখতে আশপাশের গ্রাম থেকে নানা বয়সী হাজারো মানুষের ঢল নামে। প্রতিযোগিতায় দুইটি গ্রুপে চারটি নৌকা অংশ নেয়। নৌকাবাইচ উপভোগ করেন নওগাঁ-৫ (সদর আসন) আসনের সংসদ সদ্য ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন।
গুটার বিলে বছরের বেশির ভাগ সময়ই পানি থাকে। এ বিলে প্রায় ৪০ বছর ধরে নৌকাবাইচ হয়ে আসলেও করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর পর থেকে বিলে ডিঙি ও ইঞ্জিনচালিত ছোট-বড় নৌকা আসতে থাকে। বিকেল ৫টায় নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় মূলত বড় নৌকা অংশ নেয় যাকে পানসি বলে। নৌকায় বাঁশি বাজিয়ে, মাঝিদের একত্র জয়ধ্বনিতে এবং গানের তালে, ঝোঁকে ঝোঁকে বৈঠার টানে অন্যসব নৌকাকে পেছনে ফেলে নিজেদের নৌকাকে সবার আগে যাওয়ার চেষ্টা চলে। দীর্ঘদিন পর নৌকাবাইচ হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে এক ধরনের উৎসবের আমেজ বিরাজ করছিল। নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা উপলক্ষে বিলের ধারে গ্রামীণ মেলা বসে।
নৌকাবাইচে প্রথম স্থান অর্জন করে হাঁসাইগাড়ী ইউনিয়নের আলেফ মোল্লার নৌকা। এ বিষয়ে আলেফ বলেন, ১৯৭৫ সাল থেকে খেলে আসছি। অনেকবার বিজয়ী হয়েছি এবং পুরস্কার পেয়েছি। বাইচ খেলতে প্রায় ৬০-৬২ জন লাগে। এর মধ্যে ১৭-১৮ জন মাঝি এবং বাকি সবাই বৈঠা টানে। কেউ বাঁশি বাজিয়ে মাঝিদের জয়ধ্বনিতে উৎসাহ জোগায়।
তিনি আরও বলেন, ভালোলাগা থেকেই নৌকাবাইচে অংশ নিয়ে থাকি। দর্শকরাও উপভোগ করে। আমাদের দেখে পরবর্তী প্রজন্মও নৌকাবাইচ খেলা শিখেছে।
শিকারপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী রুকুনূজ্জামান টুকু বলেন, গ্রামের প্রাচীন ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে প্রতিবছরে মতো এবারও নৌকাবাইচের আয়োজন করা হয়েছে। মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে এবং যুব সমাজকে মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে রাখতে সুস্থধারার এমন বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।
নওগাঁ-৫ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন বলেন, গত দুই বছর করোনাভাইরাসের কারণে নৌকাবাইচ বন্ধ থাকলেও এবছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই খেলাকে কেন্দ্র করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের মাঝে যেন প্রাণ ফিরে এসেছে। প্রতিবছর সংশ্লিষ্টদের নৌকাবাইচ আয়োজনের আহ্বান জানান তিনি।
আব্বাস আলী/এমআরআর/জিকেএস