নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদের ওপর হামলা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নাটোর
প্রকাশিত: ০৫:২০ পিএম, ২৩ অক্টোবর ২০২২
হামলায় আহত আসাদুজ্জামান আসাদ

নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রোববার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে নলডাঙ্গা বাজারে চেয়ারম্যানের ভাড়া বাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত চেয়ারম্যান আসাদ ছাত্রলীগ নেতা জামিউল আলিম জীবন হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি। তিনি হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিনে ছিলেন।

আহত অসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, গত ৪ অক্টোবর আমি হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে ছয় সপ্তাহের জামিন নিয়ে নাটোরে আসি। এরপর ১২ অক্টোবর সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা তৌহিদুর রহমান লিটন ফেসবুক লাইভে এসে আমাকে হত্যার হুমকি দেয়। জামিনে আসার পরে পরশুদিন থেকে উপজেলা পরিষদে অফিস করছি। শনিবার লিটন ফের আমাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। বিষয়টি আমি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং নলডাঙ্গা থানার ওসিকে জানাই। রোববার দুপরের দিকে আমি পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে উপজেলা পরিষদে যাই। এর আগে লিটনের নেতৃত্বে একটি মিছিল করা হয়। ওই মিছিল থেকেও আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এরপর দুপুর ১টার দিকে আমার ভাড়া করা বাসার সামনে পৌঁছলে লিটন, ফুটু মাস্টার, সেলিম মাস্টার, রইচ উদ্দিন রুবেল, আনোয়র হোসেন, সাজ্জাদুর রহমান, লোকমান হাকিম, আমিরুল ইসলাম জনিসহ বেশ কয়েকজন অতর্কিতে হামলা চালায়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু এবং বর্তমান এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের যোগসাজসে আমার ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমার বা আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মীর মৃত্যু হলে তারাই দায়ী থাকবেন।

আসাদের সহকারী বোরহান বলেন, প্রথমে তাকে লাঠিসোটা দিয়ে মারধরের একপর্যায়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। কিন্তু আঘাত লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে চোখের ওপরে লেগে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তবে আসাদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে তৌহিদুর রহমান লিটন বলেন, আমরা মিছিল শেষ করে থানা মোড়ে আসার পরে শুনতে পাই আসাদের ওপর হামলা হয়েছে। সেখানেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আমাদের আসাদের বাড়ির দিকে যেতে বাধা দেয়। আসাদের ওপর কারা হামলা করেছে তা আমি জানি না।

এ বিষয়ে রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিরোধ থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। অথচ আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।

আর শফিকুল ইসলাম শিমুল দাবি করেন, তিনি এ হামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না। প্রকৃতপক্ষে ছাত্রলীগ নেতা জীবন হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরিকল্পিত মিথ্যাচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান বলেন, আসাদ ফিরে আসার পর থেকই নলডাঙ্গা বাজারে উত্তেজনা চলছিল। যে কারণে বাজারের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। কিন্তু অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে তার ভাড়া করা বাসার সামনে আসাদ হামলার শিকার হন। তখন সেখানে কোনো পুলিশ ছিল না। পুলিশ অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে তৎপর রয়েছে।

আসাদুজ্জমান আসাদ ও তার ভাইদের হামলায় ছাত্রলীগ নেতা জামিউল ইসলাম জীবন গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন মারা যান। ওই হত্যাকাণ্ড মামলায় আসাদ প্রধান আসামি।

রেজাউল করিম রেজা/এমআরআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।