সন্তানের জন্য জোড়া লাগলো বাবা-মায়ের ভেঙে যাওয়া সংসার

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ০৫:০৫ পিএম, ০১ নভেম্বর ২০২২
আদালত প্রাঙ্গণেই দুজনের বিয়ের আয়োজন করা হয়

মিলন সরদারের সঙ্গে তিন বছর আগে বিয়ে হয় সুমি আক্তারের। তাদের সংসারে একটি ছেলে সন্তানও জন্ম নেয়। যার বয়স দুই বছর। এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। সুমি বাদী হয়ে আদালতে স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রীকে তালাক দেন মিলন।

ছেলেকে নিয়ে আদালতে মামলার সাক্ষী দিতে যান সুমি। এ সময় বাবাকে দেখে এজলাসে ছোটাছুটি করতে থাকে শিশুটি। বিষয়টি নজরে এলে দুজনকে ফের বিয়ের নির্দেশ দেন বিচারক। অবশেষে সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাতে আদালত প্রাঙ্গণেই ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে হয়। বাবা-মাকে একসঙ্গে দেখে খুশি তাদের একমাত্র ছেলেও।

খোজ নিয়ে জানা যায়, মিলন মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের খাগদী এলাকার কুদ্দুস সরদারের ছেলে। সুমি একই উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের ঘটকচর এলাকার শওকত আলীর মেয়ে।

মাদারীপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদের উদ্যোগে জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে দুজনের বিয়ের আয়োজন করা হয়।

jagonews24

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এর বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. রফিকুল ইসলাম, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ, জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন, পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম, পাবলিক প্রসিকিউটর মো. সিদ্দিকুর রহমান সিংসহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট, আইনজীবীসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মাদারীপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ বলেন, আদালত চলাকালে আমি জবানবন্দি নিচ্ছিলাম। তখন দেখলাম একটি শিশু এজলাসের ভেতরে দৌড়াদৌড়ি করছে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা শিশুটিকে বের করে দিচ্ছিল। আমি বললাম ওর মত করে থাকুক এবং জানতে চাইলাম শিশুটি কার? তখন জানতে পারলাম চলমান মামলার বাদী ও আসামির ছেলে। তখন বিষয়টি আমার কাছে অন্যরকম মনে হয়েছে।

মামুনুর রশিদ আরও বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে বাদীকে জিজ্ঞাস করলাম আপনি কি বর্তমান অবস্থায় সংসার করতে রাজি আছেন। বাদী সম্মতি জানান। পাশাপাশি আসামিও সংসারে সম্মতি জানান। উভয় পরিবারের লোকজনও তাদের সংসারে রাজি হন। এর আদালত প্রাঙ্গণে তাদের পুনরায় বিয়ের আয়োজন করা হয়। ভেঙে যাওয়া একটি সংসার পুনরায় একত্রিত করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, স্বামী-স্ত্রী দুজনই তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন। তাদের মধ্যে সামান্য ভুল বোঝাবুঝির কারণেই এমনটি হয়েছে। তাই তাদের সন্তানের কথা চিন্তা করে আবার তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এসজে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।