পরিত্যক্ত স্কুলঘরে মরদেহ
দুই সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার কথা বাবা-মাকে জানান শরিফুল

দিনাজপুরের বিরলে পারিবারিক কলহের জেরে দুই শিশু সন্তানকে হত্যা করে বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত কক্ষে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আসলাম উদ্দিন এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ময়নাতদন্তের জন্য দুই শিশুর মরদেহ দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাদের বাবার খোঁজ করা হচ্ছে। এছাড়াও সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ ব্যাপারে একটি মামলা করা হবে।
এর আগে শুক্রবার সকালে উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ঘর থেকে রিমন (৭) ও ইমরানের (৩) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারা উপজেলার শংকরপুর ঘোড়াপীর গ্রামের শরিফুল ইসলামের (৩৫) ছেলে।
নিহতদের দাদা রফিকুল ইসলাম জানান, কিছুদিন ধরে শরিফুল ইসলামের সঙ্গে তার স্ত্রী উম্মে কুলসুমের বিরোধ চলে আসছিল। তিন মাস আগে উম্মে কুলসুম স্বামী সন্তানদের রেখে ঢাকায় চলে যায়। সেখানে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। এরপর থেকে প্রায় সন্তানদের নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ১০-১৫ দিন আগে শরিফুল ইসলাম স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার জন্য ঢাকায় যায়। সেখানে স্ত্রী তাকে তালাক নামার কাগজ ধরিয়ে দেয়। ফিরে এসে শরিফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে কোনো এক সময় সন্তানদের বিষ খাইয়ে হত্যা করে।
নিহতদের দাদি ওছিরন বেগম জানান, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া নিয়ে কুলসুম ঢাকায় চলে যায়। সেই থেকে দুই সন্তানকে নিজের কাছে রাখতে চায়। কিন্তু আমার ছেলে এক সন্তানকে তার স্ত্রীর কাছে দিতে চায়। এ নিয়ে প্রায় মোবাইলে ঝগড়া হতো তাদের। বৃহস্পতিবার রাতে শরিফুল ইসলাম ও তার দুই ছেলে রিমন ও ইমরানকে ভাত দেই। এরপর তারা ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে বাবা ও দুই ছেলেকে ঘরে না পেয়ে সবাই খোঁজাখুঁজি শুরু করি।
সকালে শরিফুল ইসলাম আমাকে ফোন করে জানায়, সন্তানদের বিষ খাইয়ে হত্যা করেছে। মরদেহ ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ঘরে ফেলে রাখা হয়েছে। আমরা সেখানে সিমেন্টের খালি বস্তা সরিয়ে দুই নাতির মরদেহ দেখতে পাই।
বিরল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হাসান রেজা বলেন, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে একটি পরিত্যক্ত ঘরে দুই শিশুর মরদেহ পাওয়া যায়। মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
এমদাদুল হক মিলন/আরএইচ/এএসএম